বর্যায় সরগরম শিলিগুড়ি

পরিষেবা ফেরাতে রাস্তায় নামার ‘হুমকি’ গৌতমের

পরিবেশ ও নাগরিক পরিষেবার প্রশ্নে বামফ্রন্ট পুরসভার বিরুদ্ধে আন্দোলনে তৃণমূল কাউন্সিলরদের আরও সক্রিয় হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করলেন দলের দার্জিলিং জেলা (সমতল) সভাপতি তথা মন্ত্রী গৌতম দেব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৬ ০১:৫৮
Share:

নাগরিকদের সঙ্গে শিলিগুড়ি শহরের নানা বিষয় নিয়ে বৈঠকে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। — নিজস্ব চিত্র।

পরিবেশ ও নাগরিক পরিষেবার প্রশ্নে বামফ্রন্ট পুরসভার বিরুদ্ধে আন্দোলনে তৃণমূল কাউন্সিলরদের আরও সক্রিয় হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করলেন দলের দার্জিলিং জেলা (সমতল) সভাপতি তথা মন্ত্রী গৌতম দেব।

Advertisement

সোমবার দুপুরে জংশনে মন্ত্রীর দফতরে নদী দখল, ফুটপাত দখল, যানজট, পার্কিং-একাধিক বিষয় নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে যান শহরের নতুন পরিবেশপ্রেমী সংগঠন সিটিজেন ফোরাম ফর শিলিগুড়ির সদস্যরা। বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার পর মন্ত্রী সংগঠনের সদস্যদের জানান, বেশিরভাগ বিষয়গুলি পুরসভার এক্তিয়ারভুক্ত।

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে পুরসভার ভূমিকা ঠিক নেই। তাই মানুষ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিভিন্ন ক্লাবকে পুলিশ-প্রশাসনের সাহায্যে রাস্তার নেমে বিষয়গুলি ঠিক করতে হবে। এর জন্য আগামী মাসে কনভেনশনের পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

তার পরেই পুরসভায় আন্দোলন সম্পর্কে বলতে গিয়েই মন্ত্রী বলেন, ‘‘দলীয়ভাবে সব দেখা হচ্ছে। তবে পুর কাউন্সিলরদের আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। পুরসভার পরিষদীয় দলের সঙ্গে বৈঠকে বসে আগামী দিনের রূপরেখা তৈরি করা হবে। একটা বোর্ড নাগরিক পরিষেবার কিছুই কার্যত করছে না। সময় এসে গিয়েছে, এর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে রাস্তায় নামার।’’

গৌতমবাবুর কাউন্সিলরদের নিয়ে মন্তব্য নিয়ে অবশ্য দলীয়স্তরে নানা আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। দলের একাংশ নেতা জানিয়েছেন, কর বৃদ্ধি, পাস্টিক ক্যারিবাগ, জঞ্জাল, পরিবেশ, পার্কিং, ফুটপাত দখলের মত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাউন্সিলরেরা বোর্ড মিটিঙে সরব হচ্ছেন ঠিকই। কয়েক দফায় ধর্না, বিক্ষোভ, পথসভা হয়েছে। কিন্ত এতে ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে। গত কয়েকমাস ধরে দলীয়ভাবেও তেমন কোনও কর্মসূচি নেওয়া হয়নি বললেই চলে। দলের নেতাদেরও ব্যর্থতা রয়েছে। পুরসভা, পঞ্চায়েত, বিধানসভা ভোটের হারে তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। দলনেত্রী এবার শিলিগুড়ি নিয়ে ‘অন্যরকম ভাবনাচিন্তা’ শুরু করতেই নেতারা নড়েচড়ে বসা শুরু করছেন। তবে মুখে বলার থেকে টানা রাস্তার নামাটা জরুরি হয়ে পড়েছে।

এই প্রসঙ্গে পুরসভার তৃণমূলের বিরোধী দলনেতা নান্টু পাল বলেছেন, ‘‘ওই সমস্ত বিষয় নিয়ে তো আন্দোলন করছি। আরও করতে হবে। জেলা সভাপতি থেকে দলের সঙ্গে আলোচনা করে আন্দোলনের মাত্রা অবশ্যই বাড়ানো হবে।’’ উল্লেখ্য, ৪৭ ওয়ার্ডের পুরসভার তৃণমূলের কাউন্সিলর সংখ্যা ১৭।

এদিন সিটিজেন ফোরামের তরফে দুর্গা সাহা, অনিমেষ বসু, রতণ বণিক, প্রশান্ত সেন, দীপজ্যোতি চক্রবর্তীরা মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। শহরের ২০টির মত সংগঠনের সদস্যরা শহরের পরিবেশরক্ষার জন্য এই সংগঠনটি গড়েছেন। এতে অশ্রুকুমার শিকদার, গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্যের মত বিশিষ্টজনদেরও রাখা হয়েছে। আগামী ২৪ জুলাই মিত্র সম্মিলনীতে কনভনেশনের ডাকও দেওয়া হয়েছে। এর আগে তাঁরা মন্ত্রীর কাছে সমস্যা জানাতে যান।

মূলত মহানন্দা, জোড়াপানি, ফুলেশ্বরীর চর দখল, দিনভর নদীর চর জুড়ে শৌচকর্ম, গাছ বাঁচানো, দূষণ, অটো-টোটো দৌরাত্ম্য, পার্কিং লটের মত বিষয়গুলি তাঁরা মন্ত্রীকে জানান। গৌতমবাবুও তাঁদের লাগাতার কর্মসূচি নেওয়ার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘‘একদিন অনুষ্ঠান করে কাগজে ছবি, নাম ছেপে কিছু হবে না। কোনও কোনও সংগঠন তাই করছে। আপনাদের লাগাতার কাজ করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নদী দখল থেকে বাকি বিষয়গুলিতে পুলিশ-প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। আমিও আপনাদের পাশে থাকব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন