ঘুঘুমারিতে বোমাবাজি

রাতের অন্ধকারে তৃণমূলের এক অঞ্চল সভাপতির বাড়ি লক্ষ করে পর পর বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:১৫
Share:

রাতের অন্ধকারে তৃণমূলের এক অঞ্চল সভাপতির বাড়ি লক্ষ করে পর পর বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠল।

Advertisement

রবিবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে কোচবিহারের ঘুঘুমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের হাওয়ারগাড়ি এলাকায়। ওই অঞ্চল সভাপতির নাম সহিরুদ্দিন মিয়াঁ। তিনি ঘুঘুমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান এবং বর্তমানে পঞ্চায়েত সদস্য হিসেবেও রয়েছেন। ঘটনার পরেও তাঁর বাড়িতে আশেপাশের থেকে তৃণমূল সমর্থকরা জড়ো হন। স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, যুব তৃণমূলের নাম করে কয়েকজন যুবক এলাকায় সন্ত্রাস তৈরির চেষ্টা করছেন। তাঁরাই ওই ঘটনার পিছনে রয়েছেন।

যুব ও তৃণমূলের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়েছে পানিশালার পাকুরতলা এলাকাতেও। অভিযোগ, গত দু’দিনে ওই এলাকায় একজন তৃণমূল কর্মী এবং আরেকজন যুব তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে এমনভাবে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকার সাধারণ বাসিন্দাদের মধ্যে। কেন পুলিশ, দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধার করতে হচ্ছে না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এ মন ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ দাবি করেছেন, ওই ঘটনায় যারা জড়িত তাঁরা দলের কেউ নন। তিনি অভিযোগ করেন, ঘুঘুমারিতে দু’জন পঞ্চায়েত সদস্যকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “একদল দুষ্কৃতী রাত হলেই বোমা ও পিস্তল নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় বাইকে চেপে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ওই দুষ্কৃতীরা কোনও দলের নয়। পুলিশকে সব জানানো হয়েছে। এই ব্যাপারে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করছি।” যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “আমি দিল্লিতে আছি। ঠিক কী হয়েছে তা জানি না। খোঁজ নেব।”

দলীয় সূত্রের খবর, ঘুঘুমারিতে দুই পক্ষের বিরোধ বাধে গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে ২১ জন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য। ওই বোর্ড কার দখলে থাকবে তা নিয়ে বিরোধ চরমে ওঠে। একপক্ষ, জয়গাঁর একটি হোটেলে সংখ্যাগরিষ্ঠ গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যকে লুকিয়ে রাখে। সেখান থেকে নিয়ে আসার পথে অপরপক্ষ পঞ্চায়েতদের বড় অংশকে নিজেদের দিকে নিয়ে যায়। পরে আলোচনার মাধ্যমে প্রধান ও উপপ্রধান হলেও বিরোধ কমেনি।

সহিরুদ্দিন মিয়াঁ বলেন, “রাত তখন সাড়ে ১২টা মতো হবে। বিদ্যুৎ একবার চলে গিয়েছিল। আমরা জেগেই ছিলাম। বেশ কয়েকটি বাইক বাড়ির সামনে দিয়ে চলাচল করছিল। আচমকাই পর পর দুটি বোমা ছোড়া হয়। বিষয়টি বুঝতে দেরি হয়নি। বাড়ির মহিলারা ভয় পেয়ে যায়।” তিনি জানান, পরে তাঁর আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা বেরিয়ে আসে। ততক্ষণে বাইক নিয়ে উধাও হয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। বিষয়টি নিয়ে পুলিশকে জানিয়েছেন তাঁরা। এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, “এমন ঘটনা আমাদের গ্রামে কখনও হয়নি। বোমা পড়ছে গ্রামে শুনেই ভয় লাগছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন