বেহাল: বন্ধ রায়পুর চা-বাগানের শ্রমিক আবাসন। ছবি: সন্দীপ পাল
বন্ধ চা-বাগানের শ্রমিকদের জন্য পাঠানো তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের ত্রাণকে ‘ভিক্ষা’ বলে ফিরিয়ে দিলেন তৃণমূল নেতা। সূত্রের খবর, ওই তৃণমূল নেতা তথা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ‘হুঁশিয়ারিও’ দিয়েছেন যে, দলের জেলা শ্রমিক নেতাদের কেউ যেন বন্ধ বাগানে পা না রাখেন। জলপাইগুড়ির রায়পুর চা-বাগানের ঘটনা। বন্ধ এই বাগান ঘিরে তৃণমূলের মধ্যে ‘দ্বন্দ্ব’ চরমে বলে দল সূত্রের দাবি।
ঘটনার সূত্রপাত গত ১৫ অগস্টে। জলপাইগুড়ির জেলার বন্ধ চা-বাগান বলতে এখন জেলা সদর ছোঁয়া রায়পুর চা-বাগানই। স্বাধীনতা দিবসে বাগানের ছ’শো শ্রমিককে ডিম, সয়াবিন, সর্ষের তেল, গুঁড়ো দুধ-সহ আরও কিছু সামগ্রী ‘ত্রাণ’ হিসাবে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা শ্রমিক সংগঠন। প্রতিনিধি দল তৈরি হয়, কেনা হয় ত্রাণসামগ্রীও। দলীয় সূত্রের খবর, ১৪ অগস্ট রাতে রায়পুর চা-বাগানের বাসিন্দা তথা পাতকাটা পঞ্চায়েতের প্রধান প্রধান হেমব্রম ফোন করেন জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য তথা শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি রাজেশ লাকড়াকে। ফোনে হেমব্রম তাঁকে জানান, বন্ধ চা-বাগানের শ্রমিকেরা ‘ভিক্ষা’ চান না এবং পারলে, বাগান খোলার ব্যবস্থা করা হোক। ওই বাগানে যাতে জেলা তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন ত্রাণ নিয়ে ঢুকতে না পারেন, সে জন্য শ্রমিকেরা স্বাধীনতা দিবসের সকাল থেকে পাহারাও শুরু করেন বলে দাবি। জানা গিয়েছে, প্রধানের ‘হুঁশিয়ারির’ পরে শ্রমিক সংগঠনের কোনও প্রতিনিধি বাগানে যাননি।
এ দিন ফোনে যোগাযোগ করা হলে, রায়পুরের তৃণমূলের নেতা তথা পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, ‘‘আবারও বলছি, রায়পুরের চা-শ্রমিকেরা ভিক্ষা চান না। ওঁরা চান, বাগান খোলা হোক। দলের জেলার শ্রমিক নেতারা নামিদামী শিল্প নিয়েই ব্যস্ত। বন্ধ বাগান নিয়ে ওঁদের মাথাব্যথা দেখিনি কখনও। বাগান-শ্রমিকদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেলেও কেউ আসেননি!’’ অন্য দিকে, তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি রাজেশ লাকড়া বলেন, ‘‘আমরা ছ’শো শ্রমিকের জন্য ত্রাণসামগ্রীর ব্যবস্থা করেছিলাম। কিন্তু যেতে দেওয়া হল না। কেন হল না, প্রধানই বলতে পারবেন। উনি ফোন করে বলেছিলেন, ‘ভিক্ষা লাগবে না’। নেতৃত্বকে জানিয়েছি। আমরা শ্রমিকদের পাশে ছিলাম, আছিও।’’
বন্ধ বাগান নিয়ে দলের নেতাদের এই ‘দ্বন্দ্বে’ অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘দল নজর রাখছে।’’