ফিরল দেহ, বদলার ভয়ে ত্রস্ত এলাকা

শনিবার মাথাভাঙার ফুলবাড়িতে নিহত যুব তৃণমূলের নেতা বাবলু সরকারের (৩০) দেহ নিয়ে আসা হয়। তাঁকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৩৭
Share:

শ্রদ্ধা: নিহত তৃণমূল কর্মী দেহ আসার পরে মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র

মোড়ে মোড়ে জটলা। পার্টি অফিসে থমথমে মুখ। যুব নেতার দেহ পৌঁছতেই কান্নার রোল পড়ল চারদিকে। বিজেপির বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে কেউ ছুটে যাচ্ছিলেন ‘বদলা’ নিতে। কোনওরকমে ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখল পুলিশ।

Advertisement

আগেই অবশ্য গ্রাম ছে়ড়েছেন শয়ে শয়ে বিজেপি কর্মী। শনিবার মাথাভাঙার ফুলবাড়িতে নিহত যুব তৃণমূলের নেতা বাবলু সরকারের (৩০) দেহ নিয়ে আসা হয়। তাঁকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। ঘটনার পরে ছ’দিন নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন ছিল ওই কর্মী। তারপরেও তাঁকে বাঁচাতে পারেনি চিকিৎসকরা। ওই ঘটনায় নতুন করে মাথাভাঙা তেতে উঠেছে। ফের গণ্ডগোলের আশঙ্কায় প্রহর গুনছে গোটা ফুলবাড়ি।

কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে জানিয়েছেন, ওই এলাকায় নতুন করে যাতে কোনও গণ্ডগোলে না হয় সে জন্য অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়াও ওই খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বলেন, “সবদিকে নজর রয়েছে। কোনও অভিযোগ হলেই পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।” নতুন করে যাতে গণ্ডগোল না ছড়ায় সে চেষ্টার কথা জানিয়েছেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। কিন্তু ওই এলাকার পরিস্থিতি একেবারেই অন্যরকম। এ দিন ঘটনাস্থলে যান তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, “বিজেপি পরিকল্পিত ভাবে এই খুন করেছে। মানুষ এর জবাব দেবে।”

Advertisement

ওই এলাকার বিধায়ক তৃণমূল নেতা বিনয়কৃষ্ণ বর্মন, “ওই যুবকের ছোট বাচ্চা রয়েছে। স্ত্রী রয়েছে। তাঁদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারছি না। বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ দলের কর্মীদের উৎসাহ দিচ্ছেন। না হলে এই সাহস কারও হয় না।” বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য পরিকল্পিত খুনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাঁদের দাবি, ওই এলাকায় টানা সন্ত্রাস চলছিল। যেখানে বিজেপি কর্মীরা রুখে দাঁড়িয়েছে সেখানেই সংঘর্ষ হয়েছে। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “দুই দলের সংঘর্ষে অনেকেই জখম হয়েছেন। আমাদেরও এক কর্মীর আঙ্গুল কাটা পড়ে। ওই মৃত্যু দুঃখজনক। এমন ঘটনা কখনও কাম্য নয়।”

মাথাভাঙা বিধানসভার মধ্যেই পড়ে ফুলবাড়ি। গত কয়েক মাস ধরে ওই এলাকায় বিজেপির সংগঠন শক্তিশালী হয়ে উঠতে শুরু করে। মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময়ও বিজেপির কয়েক হাজার কর্মী বিডিও অফিসে যায়। সেখানে তৃণমূল কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে তাঁদের বিরুদ্ধে। ফুলবাড়িতেও দুই দলের মধ্যে বিরোধ চলছিল। গত ১৪ এপ্রিল ওই বিরোধ চরম আকার নেয়। তৃণমূলের অভিযোগ, বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় আটকে ওই যুব নেতার হাতে পায়ে, মাথায়, বুকে, পিঠে, পেটে এলোপাথারি কোপ দেওয়া হয়। যদিও বিজেপির পাল্টা দাবি, ফ্ল্যাগ টাঙানোর সময় বিজেপি কর্মীদের তৃণমূল কর্মীরা বাধা দিলে সংঘর্ষ হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন