চাইলেই গ্রেটারের নাম

বিল বকেয়া তৃণমূলের নেতাদেরও!

বকেয়া বিল নিয়ে কোচবিহার সফরে এসে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তার পরে বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে বিদ্যুৎ বিল দিচ্ছেন না রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের অনেক নেতা-কর্মীরাও।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:১৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

গ্রেটারের ডাকে পাহাড়প্রমাণ বিদ্যুৎ বিল বকেয়া বলে কোচবিহারে অভিযোগ ছিলই। বকেয়া বিল নিয়ে কোচবিহার সফরে এসে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তার পরে বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে বিদ্যুৎ বিল দিচ্ছেন না রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের অনেক নেতা-কর্মীরাও।
বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, কোচবিহারে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। উত্তর দিনাজপুরেও একই ভাবে কয়েক কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়ে রয়েছে। অভিযোগ, গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের নেতা বংশীবদন বর্মণ বিদ্যুৎ বিল বয়কটের ডাক দিয়েছেন। ভারতভুক্তি চুক্তির অনুযায়ী কোচবিহার একটি তৃতীয় শ্রেণির রাজ্য, কীভাবে তা জেলা হল, এই প্রশ্ন তুলেই বিদ্যুৎ বিল বয়কটের ডাক দেন তিনি। যদিও বংশীবাবু বয়কটের ব্যাপার মানেননি। তিনি বলেন, “কোচবিহার কীভাবে জেলা তা জানিয়ে দিলেই বিদ্যুৎ বিলের সমস্যা মিটে যায়।” যদিও তাঁর দাবি, বিদ্যুৎ বিলের বকেয়ার বড় অংশ সরকারি অফিসের।
এই অবস্থায় কোচবিহারে এসে মুখ্যমন্ত্রী ওই বিষয়ে জানতে পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বিদ্যুতের বিল দেওয়ার জন্যে সবার কাছে আবেদনও জানান। এর পরেই প্রশাসনের তরফেও পঞ্চায়েত-প্রধানদের নিয়ে বৈঠক করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তার পরেই বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ে জোর দেয় বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানি। একটি সমীক্ষা করে তাঁরা যে সব গ্রাহকরা বিল দিচ্ছেন না, তাঁদের একটি তালিকা তৈরি করেন। তাতে দেখা যায়, তৃণমূলের অনেক পঞ্চায়েত সদস্যের নাম ওই তালিকায় রয়েছে, রয়েছে একাধিক নেতার নামও। বিদ্যুৎ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “ওই গ্রাহকদের গেলেই তাঁরা জানিয়ে দেন, তাঁরা গ্রেটার করেন। বিদ্যুতের বিল দেবেন না। বললে চড়াও হন।”
বিদ্যুৎ বন্টন কর্মীদের অনেকের অভিযোগ, অন্য সময় তৃণমূল করলেও বিদ্যুতের বিলের সময় তাঁরা গ্রেটার হয়ে যাচ্ছেন। খারগরাবাড়ি, বাণেশ্বর, পুণ্ডিবাড়ি-সহ একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতে এমন উদাহরণ পেয়েছেন বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির কর্মীরা। কোচবিহার ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য পরিমল বর্মণ বিদ্যুতের বিল জমা দেওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সওয়াল করছেন। তাঁর এলাকায় এমন নজির সামনে আসায় বিব্রত তিনি। পরিমলবাবু বলেন, “সবাই যাতে বিদ্যুতের বিল দিতে শুরু করেন সে বিষয়ে প্রত্যেক পঞ্চায়েত সদস্যের সঙ্গে কথা বলব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন