ডিজিটাল রেশন কার্ড বিলিতে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সরব হলেন কুমারগঞ্জের তূণমূল বিধায়ক মাহমুদা বেগম। তাঁর অভিযোগ, ব্লকের প্রকৃত গরিব মানুষ খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় আসেননি। এপিএল ভুক্ত ধনী ব্যক্তিদের নামই এই তালিকায় উঠে এসেছে। ডিজিটাল কার্ডও হয়ে গিয়েছে তাদের।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ ব্লকে খাদ্য সুরক্ষা আইন প্রকল্পে উপভোক্তাদের ডিজিটাল রেশন কার্ড বিলি বন্টন নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিডিও-র দফতরে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এলাকার পঞ্চায়েত এবং গ্রামপঞ্চায়েত গুলির সভাপতি, প্রধান, উপপ্রধান সহ জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে ঠিক হয় আগামী ৬ এপ্রিল থেকে কুমারগঞ্জ ব্লকের খাদ্য সুরক্ষা আইনে আওতাভুক্ত ১ লক্ষ ৬ হাজার ৫৫৫ জন উপভোক্তার মধ্যে ডিজিটাল কার্ড বিলি শুরু হবে। বৈঠকে উপস্থিত এলাকার বিধায়ক মাহমুদা বেগম অভিযোগ করেন, ব্লকের প্রকৃত গরিব মানুষ এই সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় আসেননি। বিষয়টি নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়ে উপভোক্তাদের তালিকা সংশোধনের দাবি জানান তিনি। কার্ড বিলির সূচনার দিন উপস্থিত থাকবেন না বলেও ঘোষণা করেন মাহমুদা বেগম। শাসক দলের বিধায়কের মুখে এই অনিয়মের নালিশ শুনে প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ এবং দলীয় প্রতিনিধিদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ঘটনার খবর শুনে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, এই প্রকল্পে নতুন করে নাম অন্তর্ভুক্তির আবেদন করা যাবে বলে জানালে আপাতত শান্ত হন বিধায়ক। বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে মাহমুদা বেগম বলেন, ‘‘আমি আজ কলকাতা থেকে ফিরতেই দেখি বাড়ির সামনে অন্তত ২০০ লোকের ভিড়। সকলে গরিব মানুষ। তারা অভিযোগ করেন, খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে উপভোক্তার তালিকায় তাদের নাম নেই। এরপর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপিএলভুক্ত বাসিন্দাদের একই অভিযোগ পেতে থাকি।’’ তাঁর বক্তব্য, উপভোক্তাদের তালিকা পঞ্চায়েত প্রতিনিধি থেকে রেশন ডিলারদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। তা দেখেই এদিন বাসিন্দারা ওই অভিযোগ করেন। বিধায়কের বক্তব্য, ‘‘দিন দরিদ্র মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না, বড়লোকেরা সুবিধা পাবেন এটা আমি মেনে নিতে পারছি না। কার্ড বিলির দিন কী করে আমি ওই সমস্ত মানুষের সামনে গিয়ে দাঁড়াবো। তাই কার্ড বিলির(৬এপ্রিল) উদ্বোধনের দিন আমি থাকতে পারব না।’’
কুমারগঞ্জের বিডিও ভাস্কর মজুমদার বলেন, ‘‘এদিন সভায় কিভাবে উপভোক্তাদের মধ্যে ডিজিটাল কার্ড বিলি করা হবে, তা নিয়ে ব্লকের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়। বিধায়ক, কার্ডে গরিবদের নাম ওঠেনি বলে অভিযোগ করেন।’’ পরে বিষয়টি মিটে গিয়েছে বলে দাবি করে বিডিও জানান, আগামী ৬ এপ্রিল কুমারগঞ্জ ব্লকে খাদ্য সুরক্ষা আইনে উপভোক্তাদের মধ্যে ডিজিটাল কার্ড বিলি শুরু দিন চূড়ান্ত করা হয়েছে।