আহত: জখম তৃণমূলকর্মী আজিজার রহমান। নিজস্ব চিত্র
আজ, রবিবার ভোটের প্রচারে কোচবিহারে আসছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। ঠিক তার আগে, শুক্রবার রাতে দিনহাটা থানার ওকরাবাড়ি এলাকায় বোমার ঘায়ে হাত উড়ে গেল এক তৃণমূল কর্মীর। যে ঘটনার পরে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব পরোক্ষে যুব তৃণমূলের লোকজনের দিকে আঙুলও তুলেছেন। যদিও স্থানীয় যুব নেতৃত্ব এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বৃহস্পতিবার রাতভর বোমাবাজিতে উত্তপ্ত ছিল দিনহাটা। অভিযোগ, এক জনসভায় আক্রান্ত হন বিধায়ক উদয়ন গুহ। যদিও উদয়ন এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা। জখম ওই তৃণমূল কর্মীর নাম আজিজার রহমান। দল সূত্রে দাবি, বোমার ঘায়ে তাঁর ডান হাতের কিছুটা অংশ উড়ে গিয়েছে। তাঁকে প্রথমে কোচবিহার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই ঘটনায় আর এক তৃণমূল কর্মী জখম হয়েছেন। তাঁকে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
তৃণমূলের অভিযোগ, ওই ঘটনার পিছনে যুব সমর্থিত নির্দল প্রার্থীদের হাত রয়েছে। যদিও আর একটি অংশের দাবি, ওই যুবকের হাতেই বোমা ছিল। তা ছুড়ে মারার সময় তা হাতেই ফেটে যায়। তা নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন দলীয় নেতারা। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
দিনহাটায় যুব ও তৃণমূলের বিরোধ তীব্র আকার নিয়েছে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব শুরু হতেই। ইতিমধ্যেই দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক তৃণমূল কর্মী নিহত হয়েছেন। আর এক তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তার পরে দু’পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মেটানোর চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। জোড়াফুলের বিরুদ্ধে নির্দল হয়ে বহু আসনেই যুব কর্মীরা লড়াইয়ে নেমেছেন বলে দাবি অন্য পক্ষের।
সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রের ওকরাবাড়িতেও দু’পক্ষের প্রার্থী রয়েছে। শুক্রবার রাতে ওকরাবাড়ি বাজারে মিছিল বের করে তৃণমূল। সেই সময় আজিজার এবং ওই দুই কর্মীও মিছিলে ছিলেন। মিছিলের শেষ সারিতে ছিলেন তাঁরা। মিছিল শেষ হওয়ার একটু পড়েই বোমার আওয়াজে হইচই পড়ে যায়। বাজার বন্ধ হয়ে যায়। তৃণমূল কর্মীরা ওই দু’জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে হাসপাতালে নিয়ে যান।
উদয়ন বলেন, “ওই ঘটনা শুনেছি। কী করে ঘটল, তা নিয়ে তদন্ত করে পুলিশ দেখবে।” সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া অবশ্য ওই ঘটনায় নির্দল প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, “যুব সংগঠনের নাম করে কিছু নির্দল এলাকায় প্রচার চালাচ্ছেন। তাঁরাই অশান্তি তৈরি করতে আমাদের কর্মীদের লক্ষ করে বোমা ছুড়েছে।” রবিবার সুব্রত বক্সী কোচবিহারে পৌঁছলে তাঁর কাছেও অভিযোগ জানানো হবে বলে জানান জগদীশ। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “আমি দিল্লি থেকে ফিরছি। জেলায় পৌঁছে খোঁজ নেব।”
এলাকার বাসিন্দারা অবশ্য অভিযোগ তুলেছেন, সন্ধ্যের পর থেকেই দিনহাটার একাধিক এলাকায় বোমাবাজি শুরু হয়। গুলি ছোড়ার অভিযোগও ওঠে। পুলিশ কেন বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না, সে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। পুলিশ ওই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।