গৌতম দেব। —ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি এক বৈঠকে সূর্যকান্ত মিশ্রের সামনেই অশোক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন সিপিএমের এক স্থানীয় নেতা। একই ধরনের চিত্র দেখা গেল তৃণমূলের ঘরেও। প্রায় দেড় দশক ধরে যিনি দল চালাচ্ছেন, সেই গৌতম দেবের ভূমিকা নিয়ে তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠকেই এক সাধারণ সম্পাদক নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন।
রবিবার বিধাননগরের ঘটনা। দলীয় সূত্রের খবর, নতুন জেলা কমিটি গঠনের পরে চার মাস গড়িয়েছে। কিন্তু, কমিটির সদস্যরা কে, কোথায়, কী কাজ করবেন, সেই দায়িত্ব স্পষ্ট ভাবে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে না কেন, সেই প্রশ্নেই ওই বৈঠকে ক্ষোভ দেখান সাধারণ সম্পাদক প্রবীর রায় (তারক)। দলীয় বৈঠকে কমিটির সদস্যরা বলার সুযোগ পাচ্ছেন না কেন, তা নিয়েও তুমুল ক্ষোভ রয়েছে দলের মধ্যে। তর্কাতর্কির সময়ে তারকবাবু হাতের মাইক্রোফোন প্রায় টেবিলে ছুড়েও ফেলেছেন। পরে অবশ্য গৌতমবাবু তাঁকে বলার সুযোগ দিলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। তারকবাবু একান্তে তাঁর কাছে দুঃখপ্রকাশও করেন।
তৃণমূলের অন্দরের খবর, গোটা ঘটনায় ব্যথিত গৌতমবাবু। তিনি ওই বৈঠকেই জানিয়ে দেন, দলনেত্রী দায়িত্ব দেওয়ায় তিনি জেলা সভাপতি পদে রয়েছেন। নতুন প্রজন্মের হাতে দলের দায়িত্ব গেলে তাঁরও ভাল লাগবে। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমার কোনও পদের মোহ নেই। দল যে দিন বলবে সে দিনই দায়িত্ব থেকে সরে গিয়ে সাধারণ সৈনিক হিসেবে কাজ করে যাব। আমি আন্তরিক ভাবে চাই, তরুণ প্রজন্ম দলের দায়িত্ব নিক।’’
ওই সভা শেষের পরে দলের মধ্যেই নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি দলের পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের নেতৃত্বে পাহাড়ে আগের চেয়ে অনেক ভাল ফল হয়েছে। আগামী দিনে অরূপবাবু শিলিগুড়ির সংগঠনকে চাঙ্গা করতে পদক্ষেপ করবেন বলেও দলের একাংশ ভাবছেন। সেটা আঁচ করেই গৌতমবাবুর গলায় জেলা সভাপতি পদ থেকে বিদায়ের সুর শোনা যাচ্ছে কি না, তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে।
তবে গৌতমবাবু বিষয়টিকে খোলা মনেই গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘মিটিংয়ে সকলেরই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। তবে সকলকেই পদ্ধতি মেনে চলতে হবে। তারককে আমি প্রস্তাব আকারে সব জমা দিতে বলেছি। কম বয়স বলে মাথা গরম করলেও পরে দুঃখপ্রকাশও করেছে।’’ প্রবীরবাবু জানান, বৈঠকে যা হয়েছে তা নিয়ে তিনি মন্তব্য করবেন না।