গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ছাত্রের মৃত্যু, ফের বদল টিএমসিপি জেলা সভাপতি। ফাইল চিত্র।
সাবির সাহা চৌধুরীকে বহিষ্কারের পর সাগর রায়কে আনা হয়েছিল কোচবিহারে টিএমসিপির জেলা সভাপতি পদে। সেই সিদ্ধান্ত থেকেও পিছিয়ে এলেন শাসক দলের নেতৃত্ব। বুধবার রাতে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব জানান, সাগরকে ওই জেলার ছাত্র সংগঠনের সভাপতি পদে নিয়োগের চিঠি দেওয়া হয়নি।
৪ অক্টোবর দিনহাটা কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র অলকনিতাই দাস আক্রান্ত হন। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে থাকা দুষ্কৃতীরা তাঁকে রড-লাঠি দিয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ। ৬ অক্টোবর মৃত্যু হয় তাঁর। ওই খুনে অভিযুক্তের তালিকায় নাম ছিল জেলা টিএমসিপি সভাপতি সাবিরের। রবিবার সাবিরকে বহিষ্কার করেন দলীয় নেতৃত্ব। সাবির জেলা রাজনীতিতে রবীন্দ্রনাথবাবুর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত।
মঙ্গলবার রাতে কলকাতায় তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে কোচবিহারে টিএমসিপির জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সাগর রায়কে। কার্যকরী সভাপতি করা হয়েছে তাপস বর্মণকে।
বুধবার রাতেই অবশ্য সিদ্ধান্ত বদল। পার্থবাবু বলেন, ‘‘তাপসকে কার্যকরী সভাপতি করা হয়েছে। সভাপতি শীঘ্রই ঠিক হবে।’’ তা হলে সাগরের নাম ঘোষণার কারণ কী? পার্থবাবুর জবাব, ‘‘আলোচনায় অনেক নাম উঠতেই পারে। বিবেচিত হন একজনই।’’ তৃণমূল সূত্রে অবশ্য খবর, সাগরের নামে নানা অভিযোগ থাকায় বিরক্ত প্রদেশ নেতৃত্ব। তাই তাঁর নাম ঘোষণার পরেও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
সাগরের নাম ঘোষণার পর থেকেই অবশ্য দলেরই অনেকে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন। সাগরবাবুর বাড়ি পুন্ডিবাড়ি। তিনি একসময় কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের জিএস ছিলেন। ২০১৭ সালে পুন্ডিবাড়ি পেট্রোল পাম্পে এক যুবক খুনে তাঁর নাম জড়ায়। সেই ঘটনার কথা টেনে দলেরই অনেকের দাবি, তাহলে সাগরকে কেন দায়িত্বে রাখা হবে। অভিযোগ, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদেই ওই ছাত্র নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সাগরবাবু বলেন, “রাজনৈতিক ভাবে ষড়যন্ত্র করে একটি মামলায় আমার নাম দেওয়া হয়। পরে ওই মামলা থেকে আমার নাম বাদ দেওয়া হয়। এখন ওই মামলার সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই। এর বাইরে এখন কিছু বলতে চাই না।”
রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “দল যাকে দায়িত্ব দিয়েছে তাঁকে মেনে নিয়েই আমরা কাজ করব। এর বাইরে অন্য কিছু বলতে চাই না।” জেলা রাজনীতিতে মন্ত্রী বিরোধী বলে পরিচিত তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি।