চারদিক জঙ্গলে ঘেরা। ঝিঁঝিঁ পোকার একটানা ডাক। মাঝে মাঝে আরও কিছু অচেনা শব্দ ভেসে আসছে। ঘুটঘুটে অন্ধকারে ভরসা একটা মাত্র মোমবাতি। তাকে ঘিরে বসে ভয় আর অস্বস্তিতে জড়োসড়ো সাতজন। কোনও সিনেমার দৃশ্য নয়। এমনই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হল কলকাতা থেকে গরুমারায় বেড়াতে আসা একদল পর্যটককে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নেওড়া জঙ্গল ক্যাম্পে ঢুকেছিলেন সল্টলেকের বাসিন্দা দু’টি পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, সেখানকার কটেজে ঢোকার পর থেকেই কোনও কর্মীকে খুঁজে পাননি তাঁরা। কেবল কটেজের রান্নাঘরে এক কর্মীকে বেঘোরে ঘুমোতে দেখেন। তবে মদের উৎকট গন্ধে তার কাছে ঘেঁষা যাচ্ছিল না অভিযোগ। ঝুপ করে সন্ধে নামতেই চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়। কিন্তু সুইচ টিপলেও আলো জ্বলেনি। কারণ বিদ্যুৎ ছিল না। মোম জ্বালিয়ে জঙ্গল ঘেরা কটেজে আতঙ্কে কয়েক ঘণ্টা কাটে পরিবার দু’টির। শেষে এক পরিচিতের সাহায্যে রাতেই কটেজ থেকে বেরিয়ে অন্য একটি লজে ওঠেন তাঁরা। ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে বন দফতর। যদিও এতে পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং সরকারি আতিথেয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।
রিশপ ও লাভা ঘুরে এ দিন বিকাল পাঁচটা নাগাদ ওই দুই পরিবারের সাতজন সদস্য নেওড়া জঙ্গল ক্যাম্পে পৌঁছন৷ পর্যটকদের একজন সঞ্জয়কুমার দে জানান, মশার জন্য ঘরের জানালা খোলা যাচ্ছিল না৷ অথচ মশারি তো দূর অস্ত, কটেজের অফিস থেকে তাঁদের একটি তোয়ালে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি৷ রাতের খাবারের অর্ডারও কেউ নেননি৷ মোমবাতি জ্বালিয়ে ঘরে বসে ছিলেন তাঁরা।
বন দফতর দাবি করেছে বৃহস্পতিবার রাতে বাংলোয় দু’জন কর্মী ছিলেন। কিন্তু তাঁরা কারা সেই তথ্য শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত জানাতে পারেননি বন আধিকারিকরা। লাটাগুড়ির রেঞ্জ অফিসার শুভেন্দু দাস বলেন, ‘‘যতদূর শুনেছি, বিদ্যুৎ না থাকাতেই ওনারা বাংলো ছেড়েছেন৷ ঝড়-বৃষ্টির জন্য লোডশেডিং ছিল। বাংলোয় সে দিন কে ছিলেন তা খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’’