Darjeeling

পাহাড়ে বাধা, তাই ডুয়ার্সে

পুলিশ সূত্রের খবর, পাহাড়ে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আতঙ্ক ছড়াচ্ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২০ ০৫:০৭
Share:

ফাইল চিত্র

এ যেন একেবারে দুই মেরু। রাজ্য সরকারি নির্দেশে হোটল-রিসর্ট খুলতেই ডুয়ার্সে ধীরে ধীরে দেখা মিলছে পর্যটকদের। সেখানে পাহাড়ের ছবিটা একেবারেই আলাদা। গত সপ্তাহে দার্জিলিং থেকে পর্যটক দলকে নিচে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আবার কালিম্পঙের হোটেল ও রিসর্টে কোনওরকম বুকিং যাতে না নেওয়া হয়, সেই জন্য রীতমতো চিঠি দিয়ে ফতোয়া দেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে নেমেছে প্রশাসন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, পাহাড়ে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আতঙ্ক ছড়াচ্ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এখন পাহাড়ের দুই জেলার ৩২ জন করোনা আক্রান্ত শিলিগুড়ির কোভিড হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এরমধ্যে ২৩ জনই কালিম্পং জেলার বাসিন্দা। জিটিএ কর্তৃপক্ষ, দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলা প্রশাসন প্রতিদিনই সচেতনতা এবং সতর্কতা বাড়িয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু ভয় কাটছে না এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে। তাঁদের অনেকেই মনে করছেন হোটেল-রিসর্ট, হোম-স্টেগুলিতে বাইরের জেলা, রাজ্য থেকে লোকজন এলে এলাকায় সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকবে। তাই পর্যটকদের স্বাগত জানানোর বদলে উল্টো কাজ হচ্ছে নানা এলাকায়।

রবিবার কালিম্পঙের বেশ কিছু হোটেল, লজ কর্তৃপক্ষকে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়েছে, এই সময় সংগঠনের অনুমতি ছাড়া কোনও অতিথি রাখা যাবে না। হোটেলও কোয়ারান্টিন সেন্টার করা যাবে না। সংগঠনের কথা না শুনে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে, এমনটাও বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কালিম্পঙের পর্যটন মহলে শোরগোল পড়েছে। রাজ্য সরকারের নির্দেশের পরে স্থানীয়রা এ ভাবে বাধা তৈরি করলে, কী ভাবে ব্যবসা হবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন পাহাড়ের পর্যটন সংস্থা, হোটেল মালিকেরা। পুলিশ-প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেছে। ঘটনাটির কথা শুনেছেন রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেছেন, ‘‘বিষয়টি দেখছি।’’

Advertisement

গত সপ্তাহে কলকাতার এক পর্যটক দল অভিযোগ করেছিল, দার্জিলিং পৌঁছলে তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দুই শিশু-সহ ছ’জনের দলটি শেষে ডুয়ার্সের মূর্তিতে গিয়ে দু’দিন কাটিয়ে ফিরেছেন। পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, পাহাড়ের তুলনায় ডুয়ার্সের একাংশ বোধহয় পর্যটকদের কাছে বেশি সুবিধার হয়ে উঠেছে। জলদাপাড়ার একটি রিসর্টে ৮ জুন বিহার থেকে পাঁচজনের দল এলে ঘুরে যায়। স্ক্রিনিং, স্যানিটাইজ়েশন, সামাজিক দূরত্ব সব মেনেই পর্যটকেরা কয়েকদিন সেখানে ছিলেন। ১২ জুন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার জগদ্দল থেকে ১১ জনের একটি পর্যটক দল এসেছে ডুয়ার্সে। জলদাপাড়ার ওই রিসর্ট ব্যবসায়ী বিশ্বজিত সাহার ডুয়ার্সে দু’টি এবং কার্শিয়াঙের কাছে মালদিরামে একটি রিসর্ট রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়ের মানুষের মধ্যে ভয় কাটাতে হবে। ডুয়ার্সে লোক আসছে। দক্ষিণবঙ্গের দলটি টোটোপাড়া, দক্ষিণ খয়েরবাড়ি, চিলাপাতা, রাজাভাতখাওয়া, জয়ন্তী ঘুরেছেন। কোথাও সমস্যা হয়নি।’’

হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল মনে করেন, পরিস্থিতি বদল হচ্ছে, মানুষ বেরোচ্ছেন। এটাই পর্যটন শিল্পের কাছে আশার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন