TMC

পার্থর হাতে মিছিল রাশ

আর এক বিধায়ক হিতেন বর্মণও মিছিলে ছিলেন না। তুফানগঞ্জের বিধায়ক ফজল করিম মিয়াঁ পার্থপ্রতিমের সঙ্গে দেখা করে শিলিগুড়ি রওনা হন।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ 

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২০ ০৬:৫৫
Share:

শক্তি: তৃণমূলের মিছিল। সোমবার কোচবিহারে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন

হাথরস-কাণ্ডের প্রতিবাদ এবং নতুন কৃষি আইনের প্রতিবাদই ছিল ঘোষিত উদ্দেশ্য। যদিও রাজনৈতিক মহলের অনেকেই বলছেন, পার্থপ্রতিম রায় এক মিছিলে অনেক বার্তা দিলেন। এক দিকে যেমন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দীর্ণ কোচবিহার তৃণমূলে দেখাতে চাইলেন, দলের সাধারণ কর্মী, বিশেষ করে তরুণরা তাঁর দিকে। তাঁর হাতেই এখন জেলায় দলের রাশ। অন্য দিকে, তেমনই বিজেপির প্রতি বার্তাও রয়েছে কোচবিহার স্তব্ধ করে দেওয়া এই মিছিলে।

Advertisement

কত ছিল এ দিনের মিছিলে লোকসংখ্যা? তিরিশ হাজার? চল্লিশ হাজার? সংখ্যার হিসেবে না ঢুকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি পার্থ দৃশ্যতই খুশি। প্রকাশ্যে অবশ্য এ দিন অনেক নেতাই মিছিল সফল বলেই জানিয়েছেন।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ দিনই শিলিগুড়িতে হাজির অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। তাঁরা এ দিন বিকেলেই কোচবিহারের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে ডেকেছিলেন শিলিগুড়িতে। জেলার প্রবীণ নেতাদের বড় অংশই ছুটেছিলেন সেখানে। ফলে মিছিল কত দূর সফল হবে, তা নিয়ে একটা আশঙ্কা ছিলই পার্থপ্রতিমের নেতৃত্বাধীন জেলা দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে। কিন্তু গোটা শহর অবরুদ্ধ্ করা মিছিলের উদ্দেশ্য দিনের শেষে ‘সফল’ বলেই মনে করছেন তাঁরা। এ দিন মিছিলে পার্থপ্রতিমের সঙ্গে হেঁটেছেন জেলা কোঅর্ডিনেটর ও বিধায়ক অর্ঘ্য রায় প্রধান। এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ রাসমেলার মাঠ থেকে মিছিল বেরোয়। মধ্যমণি ছিলেন পার্থপ্রতিমই। দলের দাবি, মিছিলে জেলার প্রত্যেকটি ব্লক থেকেই কর্মীরা হাজির ছিলেন। মিছিলে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে কোচবিহার। দিনভর যানজটে নাকাল হয়েছেন সাধারণ মানুষ। দুপুর আড়াইটে নাগাদ মিছিল শেষ করেই দু’জনে শিলিগুড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। তখনও মিছিল শেষ হয়নি।

Advertisement

দলে এখন অভিষেকের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত পার্থ। এই মিছিলের পরে অনেকেরই ধারণা, বহুধাবিভক্ত জেলা তৃণমূলের পুরনোপন্থী নেতারা কোণঠাসা হয়ে পড়লেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অসুস্থ। এ দিনই তিনি নার্সিংহোম থেকে বাড়ি ফিরেছেন। জেলা ও ব্লক কমিটি গঠন নিয়ে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করে নিজেকে ঘরবন্দি করে রেখেছেন বিধায়ক মিহির গোস্বামী। জেলা কমিটির চেয়ারম্যান বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, আর এক কো-অর্ডিনেটর উদয়ন গুহ অভিষেকের বৈঠকে যোগ দেবেন জানিয়ে সকালেই শিলিগুড়ি রওনা দেন। বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া বাইরে রয়েছেন।

আর এক বিধায়ক হিতেন বর্মণও মিছিলে ছিলেন না। তুফানগঞ্জের বিধায়ক ফজল করিম মিয়াঁ পার্থপ্রতিমের সঙ্গে দেখা করে শিলিগুড়ি রওনা হন। বিনয়কৃষ্ণ বলেন, ‘‘শিলিগুড়িতে মিটিংয়ের জন্য মিছিলে যেতে পারিনি।’’ উদয়ন বলেন, ‘‘খুব ভাল মিছিল হয়েছে। থাকতে পারলে আরও ভাল লাগত।’’ তিনি বলেন, ‘‘নানা কারণে মিছিলে সবাই উপস্থিত থাকতে পারেননি। এর পরে সমস্ত নেতার উপস্থিতিতে আরও মিছিল হবে।’’

কিছুদিন আগেই কৃষি আইনের সমর্থনে কোচবিহারে মিছিল করে বিজেপি। স্বাভাবিক ভাবেই এ দিনের মিছিলে একদিকে যেমন বিজেপির মিছিলকে টেক্কা দেওয়ার বিষয় ছিল, তেমনই সভাপতি হওয়ার পরে দলের মধ্যে শক্তি প্রদর্শনের পালাও ছিল তার। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি মালতী রাভা বলেন, ‘‘তৃণমূল টাকা দিয়ে মিছিলে লোক এনেছে। সেখানেও তাদের দ্বন্দ্বের ছবি কিন্তু স্পষ্ট।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন