বিক্ষোভ: শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে বৃহস্পতিবার বামেদের বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি। ছবি: স্বরূপ সরকার
বামেদের কৃষক সংগঠনের ‘জেল ভরো’ আন্দোলনের জেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে কিছু ক্ষণের জন্য উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি দুই শহরই। শিলিগুড়িতে প্রধাননগরে মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে ও জলপাইগুড়িতে জেলাশাসকের দফতর লাগোয়া এলাকায় জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের অভিযোগ, সেই সময়ে বিনা প্ররোচনায় পুলিশ লাঠি চালালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শিলিগুড়িতে কয়েকজন আন্দোলনকারীর জামা টেনে ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। জলপাইগুড়িতেও লাঠি চালানোয় কয়েকজন আন্দোলনকারী জখম হয়েছেন বলে বামেদের দাবি। শেষ অবধি পুলিশ আন্দোলনকারীদের হটিয়ে দেয়। তবে দুই শহরেই মিছিল, বিক্ষোভে প্রায় ঘণ্টাখানেক যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। স্কুলবাস থমকে যাওয়ায় পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়ে।
শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘জেল ভরো আন্দোলনে যে ভাবে গ্রাম-শহরের মানুষ সাড়া দিয়েছেন তা থেকেই অনেক কিছু স্পষ্ট হচ্ছে। বিজেপি নাকি বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে আসছে বলে একটা প্রচার হচ্ছে, বাস্তব ছবিটা এদিন মানুষ দেখেছেন। ভিড় বুঝিয়ে দিয়েছে রাস্তায় নেমে আন্দোলনে কারা রয়েছে। আর কারা স্রেফ কাগজে বিবৃতি দিয়ে ‘হিরো’ সাজার অক্ষম চেষ্টা করছেন।’’
জলপাইগুড়ির বামেদের কৃষক সংগঠনের জেলা সম্পাদক আশিস সরকার জানিয়েছেন, কয়েক হাজার কর্মী কর্মসূচিতে যোগ দেন। মিছিল করে তাঁরা জেলাশাসকের দফতরের দিকে এগিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই প্রচুর পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা ছিল। ছিল কমব্যাট ফোর্স। পর পর তিনটি ব্যারিকেড করা ছিল। সেই ব্যারিকেড ভেঙে জেলাশাসকের দফতরের সামনে যাওয়ার চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা। ধ্বস্তাধস্তি বাধে পুলিশের সঙ্গে। অভিযোগ, সেই সময় আন্দোলনকারীদের উপর লাঠি চালায় পুলিশ। তাতে বেশ কয়েকজন আহত হন। এরপর আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ব্যক্তিগত জামিনে মুক্তি দেওয়া হয় তাদের। এদিনের আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে বামফ্রন্টের জেলা আহ্বায়ক সলিল আচার্য জানিয়েছেন, ‘‘তৃণমূলের পুলিশ হলে যা করা উচিত, এ দিন পুলিশ তাই করেছে।’’ দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের তরফে সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেন, ‘‘পুলিশ আমাদের কর্মীদের ওপর নির্মম ভাবে লাঠি চালিয়েছে। পুলিশের লাঠির আঘাতে বেশ কয়েকজন কর্মী জখম হয়েছেন।’’ শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার ভরত লাল মিনা বলেন, ‘‘পুলিশ লাঠি চালায়নি।’’
এ দিন মিছিলের জেরে হিলকার্ট রোডে যান চলাচল ব্যহত হয়।