যুবক খুনে ধৃত স্বামী-সহ বান্ধবী

গত ১৮ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন রঞ্জন সরকার। শুক্রবার রাতে মাথাভাঙা দুই ব্লকের বড়শৌলমারির জলঢাকা নদীর চরে উদ্ধার হয় রঞ্জনের (২২) দেহ। নয়ারহাটের পানিগ্রামে তাঁর বাড়ি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মাথাভাঙা শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৫৭
Share:

গত ১৮ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন রঞ্জন সরকার। শুক্রবার রাতে মাথাভাঙা দুই ব্লকের বড়শৌলমারির জলঢাকা নদীর চরে উদ্ধার হয় রঞ্জনের (২২) দেহ। নয়ারহাটের পানিগ্রামে তাঁর বাড়ি। তদন্ত শুরু করে এর পরে রঞ্জনের প্রাক্তন বান্ধবী রুমা বারুই এবং তাঁর স্বামী অমল বারুইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ দিন মাথাভাঙা মহকুমা আদালত দু’জনকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।

Advertisement

পুলিশের দাবি, প্রাথমিক ভাবে জেরার পরে জানা গিয়েছে, রঞ্জনের সঙ্গে এক সময়ে প্রেমের সম্পর্ক ছিল রুমার। কিন্তু পরিবার তা মেনে নেয়নি। পাশের গ্রাম দইভান্ডিতে বিয়ে হয়ে যায় তাঁর। রুমার পাল্টা অভিযোগ, তার পর থেকে প্রায়ই তাঁকে বিরক্ত করতেন রঞ্জন। তাঁদের এক সময়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা জানিয়ে দেবেন অমলকে। পুলিশের দাবি, জেরায় রুমা আরও জানিয়েছেন, দিনের পর দিন এই চাপ নিতে না পেরে একসময়ে তিনি নিজেই স্বামীকে সব জানিয়ে দেন। তার পরে দু’জনে মিলে খুনের পরিকল্পনা করেন।

কী ঘটেছিল রঞ্জনের? পুলিশের দাবি, জেরায় জানা গিয়েছে, কয়েক দিন আগে পাশের গ্রামে একটি গানের অনুষ্ঠানে বাড়ির সকলে চলে যাওয়ার পরে রুমা ফোন করে প্রাক্তন প্রেমিককে বাড়িতে ডেকে আনেন। তার পরে দু’জনে মিলে লাঠি দিয়ে মারধর করে, শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করে বলে জেরায় জানিয়েছেন দু’জনে, দাবি পুলিশের। যদিও পুলিশের একটি অংশের অনুমান, এই খুনের সঙ্গে আরও কয়েক জনের জড়িত থাকাও অসম্ভব নয়।

Advertisement

রঞ্জনের বাড়ির লোকজন এই ঘটনায় রুমা ও তাঁর স্বামীর চরম শাস্তির দাবি করেছেন। রঞ্জনের দিদি নিরুপমা মণ্ডল বলেন, ‘‘ভাইকে তো ওই মহিলাই ফোন করে ডেকে নিয়ে যায়। তার পর থেকে আর ওর কোনও খোঁজ ছিল না।’’ তখন পরিবারের তরফে থানায় অভিযোগ জানানো হয়। তদন্তে মহিলার শ্বশুর-সহ দু’জনকে জেরা করেও কয়েক ঘণ্টা পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
রঞ্জনের পরিবারের দাবি, তাঁর দেহও মিলেছে নাটকীয় ভাবে। নিরুপমার কথায়, ‘‘শুক্রবার জলঢাকা নদীর চরে কয়েকটি শেয়াল বালু খুঁড়ে গর্ত করার পরে দুর্গন্ধ ছড়ায়। তা নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে খবর দেন। তখনই খুঁড়ে রঞ্জনের দেহ মেলে।’’

মাথাভাঙা থানার আইসি বলেন, ‘‘দেহের বিভিন্ন জায়গায় হাড় ভাঙা রয়েছে রঞ্জনের। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে পিটিয়ে খুন করে তার প্রমাণ লোপাট করার জন্যই দেহটি নদীর চরে পুঁতে রাখা হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন