ছবি : সংগৃহীত।
শীতের সকালের খাওয়াদাওয়া। মানে ঠান্ডায় জড়োসড়ো ভাব কাটানোর প্রথম ধাপ। সেই সঙ্গে বাকি দিনটার আড়ষ্টতা কাটানোর প্রস্তুতিও। শীতের প্রাতরাশ তাই এমন হওয়া উচিত, যা শীতকালীন আলস্য কাটাতে সাহায্য করবে, জোগাবে প্রয়োজনীয় উষ্ণতা, শক্তি আর চনমনে ভাব।
আবার শীতকালে নানা রোগের প্রকোপ বাড়ে, বাইরের আবহাওয়া, দূষণ এবং জল কম খাওয়ার কারণে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই শরীরকে রোগ প্রতিরোধের জন্য তৈরি রাখাও জরুরি। সেই কারণেই খাবারে রাখা দরকার প্রোটিন,ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজের যথাযথ ভারসাম্য।
আর এই সব কিছু সকালেই খাওয়া জরুরি। কারণ, সারা রাত উপোসে থাকার পরে শরীর প্রথম যে পুষ্টি পায়, তা দ্রুত এবং সহজে গ্রহণ করতে পারে। বেঙ্গালুরুর এক পুষ্টিবিদ অর্জিতা সিংহ জানাচ্ছেন, শীতের সকালের উক্ত সমস্ত জরুরি শর্ত পূরণ করতে পারে একটিই খাবার— শাকশুকা।
বানানো সহজ। একটি পাত্রেই হয়ে যায় রান্না। আনাজপাতি যেমন তেমন করে কেটে নিলেও কোনও অসুবিধা নেই। গুছিয়ে করার রান্না নয় একেবারেই। শাকশুকা বানাতে সময়ও লাগে অল্প। পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশের জনপ্রিয় এই রান্না এখন গোটা বিশ্বে জনপ্রিয়। তবে এটি কেন প্রাতরাশ হিসাবে আদর্শ, তা ব্যাখ্যা দিয়েছেন পুষ্টিবিদ।
১. একটু উষ্ণতা
শাকশুকা মূলত গরম গরম পরিবেশন করা হয়। টম্যাটো এবং ডিম দিয়ে তৈরি এই রান্নার মূল দু’টি উপকরণ শরীরে উষ্ণতার জোগান দেয়। কনকনে শীতের সকালে ধোঁয়া ওঠা শাকশুকা তাই শরীরকে ভেতর থেকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে।
২. রোগ বালাই তফাতে
শাকশুকাতে রসুন, পেঁয়াজ এবং ক্যাপসিকাম ব্যবহার করা হয়। এই তিনটি উপকরণেই নানা ধরনের জোরালো অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং ভিটামিন সি রয়েছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে, শীতের রোগ-ব্যাধি দূরে থাকে।
৩. অম্বল-বুকজ্বালার ভয় নেই
এ রান্নায় জিরে এবং গোলমরিচের মতো মশলা ব্যবহার করা হয়, যা মেটাবলিজম বা বিপাকের হার বৃদ্ধি করে। ফলে, হজম হয় দ্রুত। শীতের সকালে ভারী খাবার খেয়ে বদহজমের আশঙ্কা নেই।
৪. ঝিমুনি উধাও
যেহেতু এই খাবার খেলে বিপাকের হার বাড়ে, তাই তা দ্রুত শক্তি উৎপাদনেও সাহায্য করে। শরীর বাড়তি শক্তির জোগান পেলে স্বাভাবিক ভাবেই তার ঝিমুনি ভাব, আলস্য কাটে।
৫. পুষ্টিতে ভরপুর
শাকশুকায় যেমন প্রোটিন রযেছে, তেমনই রয়েছে ভিটামিন এবং নানা ধরনের খনিজ। ফলে সকালে শরীরকে সব ধরনের প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান দেয় এই খাবার। খেলে পেট ভরেও থাকে দীর্ঘ ক্ষণ। ফলে ওজন কমানোর চেষ্টা করলে এই খাবার সাহায্য করবে।
৬. বানানো সহজ
শীতকালে বাজারে তাজা টমেটো এবং ক্যাপসিকাম সহজেই পাওয়া যায়। আর শাকশুকায় ব্যবহৃত মশলাপাতিও ঘরোয়া। জিরে, গোলমরিচ এ দেশের সব রান্নাঘরেই পাওয়া যায়। এটি তৈরিও করা যায় দ্রুত। খুব অল্প সময়ে, অল্প পরিশ্রমে এবং বিনা ঝঞ্ঝাটে বানানো যায় বলে এটি শুধু শীত নয়, যে কোনও ব্যস্ত দিনের আদর্শ পেট ভরানো সুস্বাদু প্রাতরাশ হতে পারে।