অনুষ্ঠানে খেয়ে বিপদ, মৃত দুই

জলপাইগুড়ি শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঠুটাপাকড়িতে সেরাউদ্দিন মহম্মদের বাড়িতে মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠান ছিল। গ্রামের অনেকেই তাতে সামিল হন। সেখানে খেয়ে ফেরার পরেই অনেকে অসুস্থ বোধ করেন, জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:২৮
Share:

শোকস্তব্ধ: শোক মৃতার পরিবারের। নিজস্ব চিত্র

অনুষ্ঠান বাড়িতে খাবার ও জল খেয়ে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়লেন বহু মানুষ। তাঁদের মধ্যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। ৪৬ জন এখনও অসুস্থ। জলপাইগুড়ির ঠুটাপাকড়ি গ্রামে এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সেখানকার বাসিন্দাদের দাবি, আলু খেতে ছড়ানোর জন্য যে বালতিতে কীটনাশক গোলা হয়েছিল, ওই একই বালতিতে জল ভরে অতিথিদের পরিবেশন করা হয়। তাতেই এই দুর্ঘটনা। অন্য একটি পক্ষ এই বিষয়টিকে সামনে এনে বলছে, এর থেকেই বোঝা যায়, কতটা বিষাক্ত কীটনাশক আনাজের মাধ্যমে নিয়মিত দেহে ঢুকছে!

Advertisement

জলপাইগুড়ি শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঠুটাপাকড়িতে সেরাউদ্দিন মহম্মদের বাড়িতে মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠান ছিল। গ্রামের অনেকেই তাতে সামিল হন। সেখানে খেয়ে ফেরার পরেই অনেকে অসুস্থ বোধ করেন, জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অসুস্থদের হাসপাতালে ভর্তি করানো শুরু হয়। বুধবার সকালে মোস্তাক হুসেন (৩০) ও মহম্মদ নমিজুদ্দিনের (৪৫) মৃত্যু হয়। আমন্ত্রিতের একাংশের দাবি, ভাত বা মাংসে কোনও সমস্যা ছিল না। তবে জলে কটূ গন্ধ ছিল।

জলপাইগুড়ি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার বলেন, ‘‘খাবারের নমুনা সংগ্রহ করেছি। প্রাথমিক অনুমান, খাবারে বিষক্রিয়া থেকে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’’ এ দিন পুলিশ গিয়ে অনুষ্ঠান বাড়ি থেকে বালতি এবং জলের নমুনা সংগ্রহ করে এনেছে। গ্রামে মেডিক্যাল ক্যাম্পও বসানো হয়। ঠুটাপাকড়ির অনুষ্ঠান বাড়ি লাগোয়া আলু খেত। বেশ কিছু দিন ধরে রাতে গ্রামের দিকে কুয়াশাও দেখা যাচ্ছে। কুয়াশায় যাতে আলু গাছে পোকা না ধরে, তার জন্য এখন সর্বত্রই নিয়মিত কীটনাশক ছেটানো হচ্ছে। যাঁরা সে দিন সেরাউদ্দিনের বাড়িতে গিয়েছিলেন, তাঁদের একটি অংশের দাবি, উঠোনের এক কোণে কীটনাশক স্প্রে করার মেশিনও তাঁরা দেখেছেন। মৃত মোস্তাকের ভাই মতিয়ার রহমান বলেন, ‘‘খাওয়া-দাওয়া করে ফিরেই ভাই অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আমার ছেলে জল খেতে গিয়ে কটূ গন্ধ পেয়েছে। ভাগিস ও জল বেশি খায়নি!’’ কীটনাশকের বালতি ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে সেরাউদ্দিন বলেন, ‘‘আমার বাড়িতে এমন কিছুই হয়নি।’’ পরিবারের এক সদস্য সফিয়া রহমান বলেন, “আড়াইশোরও বেশি লোক খাওয়াদায়া করেছে। কীটনাশক থাকলে সকলে অসুস্থ হয়ে পড়তেন।”

Advertisement

বাসিন্দাদের একাংশের অনুমান, কীটনাশকের বালতি ভাল ভাবে না ধুয়ে জল ভরা হয়। প্রথম এক-দু’বারে যাঁরা জল খেয়েছেন, তাঁরাই অসুস্থ হয়েছেন। পরের দিকে বিষ ভাল করে ধুয়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন