মুখ্যমন্ত্রীর ‘স্বপ্নের প্রকল্পে’ই সিন্ডিকেটের থাবা। অভিযুক্ত শাসক তৃণমূলের দুই নেতাই।
গজলডোবার মেগা ট্যুরিজম প্রকল্পে একটি নির্মীয়মাণ হোটল ও রিসর্টে গিয়ে গোলমাল, হুমকি দেওয়ার অভিযোগে তাদের পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার রাতে এনজেপি থানার পুলিশ মিলনপল্লি এলাকা থেকে তাদের ধরে। ধৃতদের নাম প্রহ্লাদ সরকার ও জলধর সরকার। তাঁরা স্থানীয় তৃণমূল নেতা হিসাবেই পরিচিত।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই রিসর্টটি কলকাতার একটি সংস্থা তৈরি করছে। গত কয়েকমাস ধরে পুরোদমে সেখানে কাজ শুরু হয়েছে। আগামী দেড় বছরের মধ্যে সংস্থাটি কাজ শেষ করবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রশিক্ষিত কর্মী, ইঞ্জিনিয়রদের এনে কাজ করানো হচ্ছে। কিন্তু মাস খানেক ধরে অভিযুক্তরা সেখানে নানা দাবি জানানো শুরু করেন বলে অভিযোগ। প্রথমে কাজে তাদের পছন্দের লোক নেওয়ার কথা বলা হয়। পরে বালি-পাথর তাদের মাধ্যমে নিতে হবে বলে হুমকিও দিয়ে আসেন।
প্রকল্পে নিযুক্ত কর্মী, অফিসারদের দাবি, ওই দুই নেতা শাসক দলের কথা বলে হুমকি দিচ্ছিল। তাদের কথামতো কাজ না করলে নইলে কাজ বন্ধ করার হুমকি দেয় তারা। বাধ্য হয়ে গত কয়েকদিন প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পুলিশে অভিযোগ করে তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরেও জানানো হয়। তাতেই পুলিশ নড়েচড়ে বসে। ধৃতদের অবশ্য দাবি, তাঁরা প্রকল্পে স্থানীয়দের কাজের কথা বলতে গিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে এলাকার লোকজনের থেকে যাতে বালি-পাথর নেওয়া হয়। সেই অনুরোধ করেছিলেন। পুলিশ কমিশনার নীরজ কুমার সিংহ বলেন, ‘‘ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি যাতে সুষ্টুভাবে কাজ করতে পারে, তাও দেখা হচ্ছে।’’
এলাকাটি ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী গৌতম দেবের বিধানসভা এলাকার অন্তর্গত। তিনি বলেন, ‘‘গজলডোবার ভোরের আলো মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। অনেক চেষ্টা করে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। সেখানে নিয়ে গোলমাল, হুমকির অভিযোগ, একেবারেই বরদাস্থ করা হবে না। ধৃতেরা যে দলেরই হোক না কেন, পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’ ধৃতদের এ দিন জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হয়। বিচারক দু’জনকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।