মনিরুল ইসলাম। নিজস্ব চিত্র
সাব ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার এক পুলিশকর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত তিনটে নাগাদ ইটাহার থানার গুলন্দর ১ পঞ্চায়েতের দৌলতপুরের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মনিরুল ইসলাম (৪৭) রাত দেড়টা নাগাদ বাড়িতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। শুক্রবার সকালে মনিরুলের দেহের ময়নাতদন্ত করিয়েছে পুলিশ।
জেলা পুলিশ সুপার সুমিত কুমারের দাবি, মনিরুল এক জন দক্ষ ও কর্তব্যপরায়ণ পুলিশকর্মী ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে জেলার সমস্ত পুলিশকর্মী শোকাহত। কী ভাবে তাঁর মৃত্যু হল, তা জানতে পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
পুলিশ জানিয়েছে, মনিরুল দীর্ঘ দিন মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ লাইনের সহকারী সাব ইন্সপেক্টর পদে কর্মরত ছিলেন। মাস পাঁচেক আগে পদোন্নতি হয়ে সাব ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার পুলিশকর্মীর দায়িত্ব পান। পদোন্নতির পরে তাঁকে উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশ লাইনে বদলি করা হয়। এর পরে জেলা পুলিশের তরফে তাঁকে কর্ণজোড়ায় জেলার রিজার্ভ পুলিশ কার্যালয়ের পুলিশ কল্যাণ আধিকারিকের (আরও ওয়েলফেয়ার) দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই থেকে তিনি ওই দায়িত্বেই ছিলেন। ২৯ জানুয়ারি জেলা পুলিশ সুপার সুমিত কুমার তাঁকে জেলা পুলিশ লাইনের রিজার্ভ ব্যাটালিয়নে বদলি করেন। তাঁর জায়গায় চাকুলিয়া থানায় কর্মরত সাব ইন্সপেক্টর নারায়ণচন্দ্র দাস এখনও পর্যন্ত পুলিশ কল্যাণ আধিকারিকের পদে যোগ না দেওয়ায় আমৃত্যু মনিরুলই ওই পদে কর্মরত ছিলেন।
মনিরুলের দু’পক্ষের দু’জন স্ত্রী ও তাঁদের তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। প্রতিদিনের মতো মনিরুল বৃহস্পতিবার সন্ধেয় ডিউটি শেষ করে বাসে চেপে ইটাহারের দৌলতপুরের বাড়িতে ফেরেন। পরিবারের দাবি, রাত দেড়টা নাগাদ আচমকা ঘুম থেকে উঠে তিনি অসুস্থ বোধ করেন। তাঁর বুকে ব্যথা শুরু হয়। এর পরেই পরিবারের লোকেরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় মনিরুলকে রায়গঞ্জ মেডিক্যালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে ওই পুলিশকর্মীর মৃত্যুর বিষয়ে এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি। তবে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন কিনা, তা ময়নাতদন্তে খতিয়ে দেখছেন চিকিৎসকেরা।
মনিরুলের দাদা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্মী মহম্মদ মুশার দাবি, ‘‘ভাই হৃদরোগে নাকি অন্য কোনও কারণে মারা গিয়েছে, তা এখনও আমরা বুঝতে পারছি না। আমরাও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি।’’