র্যাফ মোতায়েন করা হয়েছে। ফাইল চিত্র
কখনও বোমা-গুলির আওয়াজ। কখনও মারধর। কখনও ব্যবসা বন্ধ। কখনও রাস্তা অবরোধ। আবার বাড়িতেও আগুন। কেন বার বার উত্তপ্ত হয়ে উঠছে কোচবিহারের দেওয়ানহাট? আসলে কিসের লড়াই চলছে? কারাই বা রয়েছে এর পিছনে? একটি ছোট্ট জনপদ কিছু দিন আগেও শান্ত ছিল। বাসিন্দারাদের অনেকে অভিযোগ করেছেন, গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে যুব তৃণমূলের সঙ্গে তৃণমূলের দ্বন্দ্বেই তাল কেটেছে দেওয়ানহাটের। ক্ষমতা দখলের পিছনে রয়েছে টাকার লোভ। গত কয়েক বছরে ওই এলাকার একাধিক তৃণমূল নেতা ফুলে ফেঁপে উঠেছেন। শুধু তাই নয়, দুই একজন নেতা বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন বলেও দাবি। প্রকাশ্যে দিনের বেলা সশস্ত্র অবস্থায় ঘুরে বেড়ালেও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। পরিণামে যা ঘটার ঘটছে তাই।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে চাননি। তিনি বলেন, “কিছু দুষ্কৃতী ওই এলাকায় গন্ডগোল ছড়ানোর চেষ্টা করছে। তারা তৃণমূলের কেউ নন। এই ব্যাপারে আমরা পুলিশকে জানিয়েছি।” গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়টি মানতে চাননি তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়ও। তিনি বলেন, “যুব তৃণমূল আলাদা কোনও দল নয়। তৃণমূলের শাখা সংগঠন। এখানে দ্বন্দ্বের কোনও সুযোগ নেই। দলের নির্দেশ মেনেই সমস্ত কর্মীরা কাজ করছে। কেউ যদি কোনও দলবিরোধী কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তা রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হবে।”
নেতৃত্ব অস্বীকার করলেও বাসিন্দারা বলছেন অন্য কথা। নাটাবাড়ি বিধানসভার মধ্যে থাকা দেওয়ানহাট ভৌগোলিক দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। ওই বিধানসভার বিধায়ক উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। আবার দেওয়ানহাটের পাশের অঞ্চল জিরানপুরে সাংসদ তথা যুব নেতা পার্থবাবুর বাড়ি। আর একদিকে দেওয়ানহাটের পরেও দিনহাটা মহকুমার ভেটাগুড়ি। ওই এলাকাতে আরেক যুব নেতা নিশীথ প্রামাণিকের বাড়ি। দাবি, সব পক্ষই দেওয়ানহাট নিজেদের কব্জায় রাখতে মরিয়া হয়ে ওঠে।
বিরোধীদের অভিযোগ, গ্রাম পঞ্চায়েতে উন্নয়নের জন্য আসা টাকা লুঠ চলছে। সেই টাকার জন্যেই শাসক দলের দুই পক্ষ মরিয়া হয়ে উঠেছে। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহানন্দ সাহা বলেন, “উন্নয়নের জন্য আসা টাকা লুঠ হয়ে যাচ্ছে। তৃণমূলের অনেক নেতার চালচলন পাচ বছরে পাল্টে গিয়েছে। এই সব নিয়েই লড়াই চলছে।” দেওয়ানহাটের প্রধান লিপিকা দেবী বলেন, “দুর্নীতির কোনও অভিযোগ এই গ্রাম পঞ্চায়েতে নেই।’’