ময়নাগুড়ি থেকে তিন জেলার কোনওটিই বেশি দূরে নয়।
সভার মঞ্চ যেখানে বাঁধা হচ্ছে, তার পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে ২৭ নম্বর জাতীয় সড়ক। এই পথ ধরে গেলে ধূপগুড়ি হয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা। যদি সে দিকে না যেতে চান, তা হলে অন্য পথে চলুন ক্রান্তি। বা লাটাগুড়ি। আবার শহরে ঢোকার আগে আর এক দিকে বেঁকে চলে যেতে পারেন কোচবিহার জেলার দিকে।
ময়নাগুড়ির এই কৌশলগত অবস্থানই মাথায় রেখেছিলেন বিজেপি ও স্থানীয় সঙ্ঘ নেতারা। তাই শিলিগুড়ি বা জলপাইগুড়ি শহর নয়, প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চ বাঁধার জন্য বেছে নেওয়া হল ময়নাগুড়ির নিকটবর্তী চূড়াভাণ্ডারকে।
বিজেপি নেতাদের এই কথার সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত স্থানীয় মানুষজন। তাঁদের কথায়, ময়নাগুড়ি থেকে তিন জেলার (আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও দার্জিলিং) কোনওটাই বেশি দূরে নয়। বিজেপি এ বারে নজর দিচ্ছে আলিপুরদুয়ার জেলায়। একই সঙ্গে জলপাইগুড়ির ডুয়ার্স অঞ্চলের ভোটেও থাবা বসাতে চাইছে। ময়নাগুড়ি থেকে এক দিকে ধূপগুড়ি হয়ে ফালাকাটা, অন্য দিকে লাটাগুড়ির জঙ্গলমহল। ফলে চূড়াভাণ্ডার থেকে মোদীর বার্তা সহজেই এই দুই এলাকাকে ছুঁয়ে যাবে।
গত বছর গুজবের জেরে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় ক্রান্তি সরগরম ছিল। তখন প্রতিবাদ-বিক্ষোভের সময়েই দেখা যায়, এলাকার রাজনৈতিক সমীকরণ বদলাচ্ছে। মোদী তথা বিজেপি নেতৃত্ব চোখ সে দিকে থাকবে।
নজর থাকবে কোচবিহারের দিকে। এই জেলায় এক সময়ে শক্তিশালী ছিল বিজেপির সংগঠন। পার্থপ্রতিম রায় যখন লোকসভা উপনির্বাচনে জেতেন, তখন দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিল বিজেপি। বস্তুত, রাজ্যে বিজেপির উত্থান প্রথম ধরা পড়ে সেই উপনির্বাচনেই। কিন্তু সম্প্রতি এই জেলায় জোর কমেছে পদ্মের। মনে করা হচ্ছে, মেখলিগঞ্জ, মাথাভাঙা বা কোচবিহার শহর থেকে মোদীর সভায় লোক আসবে আগামী শুক্রবার।
সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল আলিপুরদুয়ার। চা বাগান ও আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল নিয়ে তৈরি এই লোকসভা আসনে সঙ্ঘ যথেষ্ট সক্রিয়। তাকে সামলাতে প্রশাসনিক ভাবে রাজ্য সরকার সরাসরি প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দিচ্ছে অধিবাসীদের হাতে। কিন্তু তাতেও যে দেরি হয়ে গিয়েছে, সেটা বলছেন এলাকার অনেকেই।
আলিপুরদুয়ারকে বিশেষ ভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সভায়। সেখানকার বিধায়ক মনোজ টিগ্গাও সম্ভবত থাকবেন মঞ্চে। থাকতে পারেন চা বাগান এলাকার আদিবাসী নেতা জন বার্লা। তাঁদের সামনে রেখে মোদী চা বাগানকে কোনও নতুন বার্তা দিতে পারেন বলেও মনে করা হচ্ছে।