siliguri

হাতে টাকা চাই, প্রশ্ন কৃষি-ঋণেও

পরিযায়ী শ্রমিকদের আগামী দু’মাস রেশন দেওয়ার ঘোষণা হয়েছে, কিন্তু তাঁদের স্থায়ী কর্মসংস্থানের কোনও কথাও শোনা যায়নি বলে দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২০ ০৬:০৪
Share:

ফাইল চিত্র

পরিযায়ী শ্রমিক, ফুটপাতের হকার, প্রান্তিক কৃষক— সব ক’টি লব্জই বৃহস্পতিবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের সাংবাদিক বৈঠকে শোনা গিয়েছে। যদিও উত্তরবঙ্গে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিক থেকে প্রান্তিক কৃষক, সকলেরই মুখে প্রশ্ন, কেন্দ্রের প্রকল্পের কতটা সুবিধে গ্রামে এসে শেষমেশ পৌঁছবে? পরিযায়ী শ্রমিকদের আগামী দু’মাস রেশন দেওয়ার ঘোষণা হয়েছে, কিন্তু তাঁদের স্থায়ী কর্মসংস্থানের কোনও কথাও শোনা যায়নি বলে দাবি। সব ক্ষেত্রেরই দাবি, এই মুহূর্তে হাতে নগদ জোগানের প্রয়োজন ছিল, তার কোনও সংস্থান এ দিনের ঘোষণায় অন্তত নেই বলেই দাবি।

Advertisement

পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রশ্ন

পরিযায়ী শ্রমিকরা যাতে ঘরে ফিরে নিজের রাজ্যে ১০০ দিনের কাজ পান, তা দেখার জন্য রাজ্য সরকারগুলিকে বলা হয়েছে। এই সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ওই পদক্ষেপ পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কতটা কার্যকরী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের অনেকেই জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে তাঁদের হাতে টাকা প্রয়োজন। তাঁদের ঘরে যেমন খাবারের অভাব রয়েছে। তেমনই চিকিৎসা-সহ নানা সমস্যা রয়েছে। আরও কয়েক জন করে জানিয়েছেন, ১০০ দিনের প্রকল্পে আগেও তাঁরা কাজ করছিলেন। কিন্তু ওই টাকা পেতে অনেকটাই সময় লেগে যায়। তা হলে এখন চলবে কী করে? আপাতত এ প্রশ্নের উত্তর নেই বলেই দাবি পরিযায়ীদের। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “অর্থমন্ত্রী এর আগেও নানা ঘোষণা করেছেন। আর এ দিনের ঘোষণাতেও স্পষ্ট কিছু নয়। পরিযায়ী শ্রমিকদের খাদ্যসামগ্রী দিচ্ছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় সরকার এখনও ডাল দিতে পারেননি। চাল দিচ্ছে নিম্নমানের।”

Advertisement

কিষাণ কার্ড নিয়ে বিভ্রান্তি

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী দাবি করেছেন, যে কৃষকদের হাতে কেসিসি বা কিসান ক্রেডিট কার্ড নেই, তাঁরাও ঋণ পাবেন। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বামপন্থীদের। কৃষক নেতাদের দাবি, এর থেকে খুব সহজেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলতে পারতেন সব কৃষকের হাতে ক্রেডিট কার্ড পৌঁছে দেওয়া হবে। কার্ড নেই যাঁদের, তাঁদের হাতে ঋণ দেওয়া মানেই প্রকৃত কৃষকের হাতে না গিয়ে সেই টাকা ব্যবসায়ীর হাতে চলে যাবে। জলপাইগুড়ির বামপন্থী কৃষক নেতা পীযূষ মিশ্রের প্রশ্ন, “কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বললে কার্ড নেই, এমন প্রায় আড়াই কোটি কৃষক উপকৃত হবে। এই আড়াই কোটি সংখ্যা উনি পেলেন কোথা থেকে? দেশে তো অন্তত ২০ কোটি কৃষকের কার্ড নেই। তার মানেই বোঝা যাচ্ছে, একটি তালিকা ভিতরে ভিতরে হয়েছে। কৃষকদের নাম করে ব্যবসায়ীদের ঋণ দেওয়া হবে।”

শহুরে প্রাপ্তি?

শহুরে গরিবদের জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় ভাঁড়ার ঘরের কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। পিপিপি প্রকল্পের মাধ্যমে হাউসিং করে কম ভাড়ায় শহরের গরিব এবং পরিযায়ীদের থাকার কথা বলা হয়েছে। বিষয়গুলি আদতে কতটা নীচতলা অবধি পৌঁছবে, তা নিয়ে সন্দিহান রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। তিনি জানান, ঋণ, ভাড়া বাড়ি বা রেশন নিয়ে কি সমস্যার সমাধান হবে! উল্টে মানুষ দেনার দায়ে ডুবে যেতে পারে। অশোকবাবু বলেন, ‘‘দীর্ঘকালীন ব্যবস্থার কথা ভাবা না হলে আদতে গরিব গরিবই থাকবে। তাঁদের জীবন জীবিকায় প্রভাব পড়ে এমন কাজ করতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement