অধরা দোষী,  আতঙ্কে গ্রাম

পুলিশ মাইকিং করে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি স্থানীয় ক্লাবগুলির সঙ্গে কথা বলছেন।  ঘোকসাডাঙার ওসি মহিম অধিকারী বলেন, ‘‘আমাদের দিক থেকে সবরকম চেষ্টা হচ্ছে ছেলেধরা গুজব আটকানোর জন্য। আমরা যেমন সে-দিনের দোষীদের খুঁজছি, তেমনি আর যাতে এ রকম ঘটনা না হয় সেজন্য মাইকিং করছি। কয়েকটি ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৮ ০৭:৩০
Share:

প্রতীকী ছবি।

ছেলেধরা সন্দেহে মাথাভাঙা ২ ব্লকের বড় শৌলমারি গ্রামের দেওয়ানবসে এলাকার যুবক দিলীপ ও বিনোদ বর্মনকে ছেলেধরা সন্দেহে মার খেতে হয়েছিল। মারধর করা হয়েছিল তাঁদের গাড়িচালক আজাদ ও তাঁর ভাই আইনুল হককে। ছেলেধরা আতঙ্ক থেকেই ওই হামলা বলে জানিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা।

Advertisement

তবে সেই আতঙ্ক কাটাতে পুলিশ ও গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য থেকে প্রধান সকলেই তৎপর। পুলিশ মাইকিং করে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি স্থানীয় ক্লাবগুলির সঙ্গে কথা বলছেন। ঘোকসাডাঙার ওসি মহিম অধিকারী বলেন, ‘‘আমাদের দিক থেকে সবরকম চেষ্টা হচ্ছে ছেলেধরা গুজব আটকানোর জন্য। আমরা যেমন সে-দিনের দোষীদের খুঁজছি, তেমনি আর যাতে এ রকম ঘটনা না হয় সেজন্য মাইকিং করছি। কয়েকটি ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। দু’একদিনের মধ্যে সমস্ত ক্লাবকে নিয়ে আলোচনায় বসব। ক্লাবগুলিকে গ্রামে গ্রামে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হবে। স্কুলশিক্ষকদেরও অনুরোধ করব নিজেদের স্কুলে সচেতনতা শিবির করতে।’’

কিন্তু আতঙ্কের জন্য পুলিশি নিষ্ক্রিয়তাও অনেকাংশে দায়ী বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা গৌরপদ বিশ্বাসের। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার চারদিন পরেও দু’জনের বেশি কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। এত বড় ঘটনার পরেও দোষীরা যদি ছাড় পেয়ে যায় তবে মানুষ কার উপর ভরসা করবে। দোষীদের শাস্তি হলেই গ্রামে আর এ রকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না।’’ একই দাবী দিলীপ ও বিনোদের বাবারও। বাবা দীনেশ্বর বর্মন বলেন, ‘‘আমার ছেলেরা কেরলে কাজ করে যা টাকা এনেছে তা কেড়ে নেওয়া হল। পরিচয়পত্র দেখানো সত্ত্বেও মারধর করল ওরা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ছেলে দু’জন মার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে রয়েছে। যা টাকা উপার্জন করে এনেছে সব শেষ। তার উপর চিকিৎসার খরচ। কী করে সংসার চলবে সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না। আমাদের যারা পথে নামাল তাদের শাস্তি চাই।’’

Advertisement

পুলিশের সঙ্গে সচেতনতা বাড়াতে পিছিয়ে নেই বড় শৌলমারি গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য থেকে প্রধান। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রতন নাট্টা বলেন, ‘‘সে-দিনের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। একদিকে যেমন ছেলেধরার আতঙ্ক, তেমনি অন্যদিকে ছেলেধরা সন্দেহে মার খাওয়ার ভয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা সন্ধের পর থেকে ঘরবন্দি হয়ে পড়ছেন। রাতে গ্রামের কেউ হাসপাতালেও রোগী নিয়ে যেতে ভয় পাচ্ছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আতঙ্ক দূর করতে পথে নেমে প্রচার করতে হচ্ছে।’’

গ্রামের প্রধান উৎপল বিশ্বাস আবার সচেতনতা বাড়াতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের কাজে লাগাচ্ছেন বলে জানালেন। তিনি বলেন, ‘‘অনেক মহিলাই খুব আতঙ্কে রয়েছেন। ফলে তাঁদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। বেশ কয়েকটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারাও রাজি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement