আড়াই মাস পর পোস্টারই ফেরাল ছেলেকে

আড়াই মাস আগের ঘটনা। ৩১ বছরের মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে তজবুর রহমানকে ডাক্তার দেখাতে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরে এসেছিলেন ষাটোর্ধ্ব মা জাবেদা বিবি। কিন্তু হাসপাতালে ভিড়ে হারিয়ে গিয়েছিলেন তজবুর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৫৬
Share:

জাবেদা ও তজবুর। নিজস্ব চিত্র

আড়াই মাস আগের ঘটনা। ৩১ বছরের মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে তজবুর রহমানকে ডাক্তার দেখাতে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরে এসেছিলেন ষাটোর্ধ্ব মা জাবেদা বিবি। কিন্তু হাসপাতালে ভিড়ে হারিয়ে গিয়েছিলেন তজবুর। অনেক খুঁজেও সন্ধান পাননি ছেলের। পুরাতন মালদহ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন তিনি। তবু পুলিশ সন্ধান দিতে পারেনি তাঁর ছেলের। শেষপর্যন্ত প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ধারদেনা করে পোস্টার ছাপিয়ে ছেলের ছবি-সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার সেঁটেছিলেন জাবেদা। এমনকি, দুই দিনাজপুর ও মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন এলাকাতেও পোস্টার সেঁটেছিলেন তিনি। পোস্টারে তাঁর এক প্রতিবেশীর মোবাইল নম্বরও দেওয়া ছিল।

Advertisement

অবশেষে, পোস্টারের সূত্রেই জাবেদা খোঁজ পেলেন হারানো ছেলের। বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুশমণ্ডি থানার মহিপাল গ্রাম থেকে তিনি ছেলেকে ফিরিয়ে আনেন পুরাতন মালদহের বরকল ইসলামপুর গ্রামের বাড়িতে। জাবেদার সঙ্গে কয়েকজন প্রতিবেশীও গিয়েছিলেন। এতদিন পর সন্তানকে কাছে পেয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি বৃদ্ধা। ছেলেও মাকে দেখে ডুকরে কেঁদে ওঠে।

জাবেদা জানান, বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই। তাই মালদহ মেডিক্যাল কলেজের আউটডোরে মানসিক বিভাগে চিকিৎসা চলছিল ছেলের। ২৬ নভেম্বর তিনি নিজেই ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন ডাক্তার দেখাতে। আউটডোর ভবনের তিনতলায় মানসিক বিভাগে লাইনে দাঁড়িয়ে ছেলেকে ডাক্তারও দেখান। এরপর নীচে নামেন বাড়ি ফেরার জন্য। কিন্তু ভবন থেকে এক্স-রের ঘরের সামনে দিয়ে বের হওয়ার সময় সেখানে প্রচণ্ড ভিড় ছিল। তিনি জানান, সেই ভিড়ের মধ্যে পড়ে তাঁর ছেলে হারিয়ে যায়। তিনি এ দিন বলেন, “বুধবার রাতে পোস্টারের ওই নম্বরে একটা ফোন আসে। ওপ্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি ছেলের বিষয়টি জানান। পরদিন কয়েকজন প্রতিবেশীকে নিয়ে চলে যাই কুশমণ্ডিতে এবং ছেলেকে বাড়ি নিয়ে আসি।’’

Advertisement

এলাকার বিধায়ক ভূপেন্দ্রনাথ হালদার বলেন, “ছেলে হারিয়ে যাওয়ার পর ওই বৃদ্ধা আমার কাছে এসেছিলেন। সমস্যার কথা শুনে পুলিশকেও বলেছিলাম। শেষপর্যন্ত ছেলে মায়ের কাছে ফিরেছে এটাই বড় কথা”। মালদহ থানার পুলিশ এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement