বন্যায় ভেঙে পড়েছে চরতোর্সা নদীর কাঠের সেতু। ফালাকাটায়। ছবি: রাজকুমার মোদক
সেতু ভেঙে ফালাকাটা থেকে আলিপুরদুয়ারের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ আট দিন ধরে। যাতায়াত বন্ধ স্কুল-কলেজের কয়েকশো পড়ুয়ার, নিত্যযাত্রী-সহ রোজ নদী পারাপারকারি লক্ষাধিক বাসিন্দার। চাষিরাও উৎপাদিত ফসল বাজারে নিয়ে যেতে পারছেন না।
১১ তারিখ ফালাকাটা থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে বালুরঘাট এলাকায় আলিপুরদুয়ারগামী সড়কে চর তোর্সা নদীর উপর কাঠের সেতু ভেঙে পড়ে। সেতু ভেঙে যাওয়ায় প্রশাসন প্রথম কয়েকদিন পারাপারের কোনও ব্যবস্থা না করায় ১৫-২০টি বেসরকারি নৌকায় শুরু হয় পারাপার। তাতে জনপ্রতি ১০ টাকা ও বাইক-সহ ৩০ টাকা ভাড়া গুনতে হচ্ছে। তিনদিন আগে প্রশাসনের তরফ থেকে দু’টি নৌকা দেওয়া হয়। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম বলে ক্ষোভ বাসিন্দাদের।
ফালাকাটার শিসাগোড় গ্রামের কলেজ ছাত্রী সরস্বতী বর্মন ও স্কুল ছাত্রী জয়া সরকার, প্রিয়া বর্মনেরা জানায়, “সেতু ভেঙে যাওয়ার পর থেকে স্কুল-কলেজে যাওয়া বন্ধ। বাস ভাড়া বাদেও প্রতিদিন পারাপারের জন্য ২০ টাকা খরচ করার ক্ষমতা আমাদের নেই। তিনদিন আগে সরকারি নৌকা পারাপার শুরু করলেও প্রচণ্ড ভিড়ে নৌকায় উঠা যায় না। প্রতি বছর বর্ষায় মাসখানেক স্কুল-কলেজের কথা ভুলে যেতে হয়।”
ফালাকাটা-আলিপুরদুয়ার সড়কে দোলং, চরতোর্সা, মরা তোর্সা,ও সঞ্জয় নদী পযর্ন্ত মোট চারটি কাঠের সেতু পড়ে। প্রতি বর্ষার বন্যায় কোনও না কোনও সেতুই জলস্রোতে ভেঙে পড়ে। ফালাকাটা ও আলিপুরদুয়ার ১ নম্বর ব্লকের বালুরঘাট, বংশীধরপুর, শিসাগোড়, মেঝবিল, কাঁঠালবাড়ি, পলাশবাড়ি ও শালকুমারহাট ও কালীপুরের পড়ুয়া, বাসিন্দা-সহ সরকারি বেসরকারি কাজে ফালাকাটা বা আলিপুরদুয়ার যাওয়ার প্রায় এক লক্ষ মানুষ এই সেতুর উপর নির্ভরশীল।
দীর্ঘদিনই কাঠের সেতুর পরিবর্তে পাকা সেতুর দাবি জানিয়ে আসছেন। দাবিপত্র পাঠানো হয়েছিল বাম আমলের মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। এ বারও বন্যায় সেতু ভাঙার পর দুই ব্লকের বাসিন্দারা দ্রুত সেতু মেরামত ও পাকা সেতুর দাবিতে গণ স্বাক্ষরিত দাবিপত্র পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক সমীরন মণ্ডল জানান, “দ্রুত সেতু মেরামতের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হয়েছে।”