Sikkim Flood

সিকিম বিপর্যয়: সেনার বাঙ্কার বানাতে গিয়ে নিখোঁজ বালুরঘাটের নয় শ্রমিক, উদ্বেগে পরিবার

পুজোর আগেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু প্রকৃতির তাণ্ডবে সিকিম লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ার পর থেকে ওই ন’জনের কোনও খোঁজ নেই। ৩ অক্টোবর পরিবারের সঙ্গে শেষ বার কথা হয়েছে তাঁদের।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৩ ১৯:০০
Share:

সিকিমের ভয়ঙ্কর সেই বিপর্যয়ের ছবি। —ফাইল চিত্র।

মেঘভাঙা বৃষ্টি আর হড়পা বানের পর ১০ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও উত্তর সিকিমের চিন সীমান্তে ভারতীয় সেনাদের জন্য বাঙ্কার বানানোর কাজে যাওয়া দক্ষিণ দিনাজপুরের ন’জন ঠিকা শ্রমিকের কোনও খোঁজ মিলল না। উদ্বেগে নাওয়া-খাওয়া ভুলেছে পরিবার। প্রশাসনের তরফে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু কোনও রকম কোনও খবরই নেই নিখোঁজদের।

Advertisement

উত্তর সিকিমে কাজে গিয়ে নিখোঁজ শ্রমিকদের মধ্যে রয়েছেন বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদার গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা নয়ন মার্ডি, জয়ন্ত মুর্মু এবং সুজয় টুডু। চেঙ্গিসপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নপাড়া গ্রামের বিজয় মুর্মু, কুমারগঞ্জ ব্লকের কুড়ালডাঙা গ্রামের বাসিন্দা নগেন মুর্মু, বিক্রম সরেন এবং বদন সরেন। বাকি দু’জন নিখোঁজের নাম এখনও জানা যায়নি।

ওই শ্রমিকদের পরিবার সূত্রে খবর, পুজোর আগেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু, ৩ অক্টোবর মঙ্গলবার, শেষ বার ওই ন’জনের সঙ্গে ফোনে কথা হয় পরিবারের। তার পর দিনই প্রকৃতির তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে যায় সিকিম। এত দিন যে ঠিকাদার সংস্থা ওই শ্রমিকদের কাজে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের আশ্বাসে অপেক্ষা করছিল পরিবারগুলো। কিন্তু, ১০ দিন কেটে যাওয়ার পর আর ধৈর্য ধরতে পারছেন না পরিজনেরা। তাঁরা বালুরঘাট থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছেন।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ২২ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকার ২৭ জন শ্রমিক শিলিগুড়ির একটি ঠিকাদার সংস্থার মাধ্যমে উত্তর সিকিমের জ়িরো পয়েন্টে গিয়েছিলেন কাজে। সূত্রের খবর, সেনার হয়ে চিন সীমান্তে বাঙ্কার নির্মাণের কাজে যুক্ত ছিলেন। তবে প্রচণ্ড ঠান্ডা এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে কিছু দিনের মধ্যে ১৮ জন শ্রমিক বাড়ি ফিরে এসেছিলেন। বাকিরা কাজ করছিলেন। তা ছাড়াও বিভিন্ন জেলার আরও ৬০ -৭০ জন শ্রমিক জ়িরো পয়েন্টে ছিলেন। বুধবার থেকে তাঁদের সঙ্গে আর যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

বোয়ালদার গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় মুর্মু বলেন, ‘‘প্রায় ৭০ জন শ্রমিক ছিলাম আমরা। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গিয়েছিলাম কাজের জন্য। কিন্তু ওখানে শ্বাসকষ্টের সমস্যার জন্য অধিকাংশই বাড়ি চলে আসি। আমি নিজে সাত দিন কাজ করার পর নেমে এসেছি। আমাদের গ্রাম থেকে যাওয়া বাকিরা ওখানেই ছিল। কিন্তু সিকিমের বন্যার পর থেকে তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি।’’ কাজে গিয়েছিলেন আদুরি মুর্মুর দাদা। তাঁর কোনও খোঁজ নেই। আদুরি বলেন, ‘‘অন্যান্য শ্রমিকের সঙ্গে সিকিমে কাজ করতে গিয়েছিল দাদা। বন্যার ঘটনার পর আমরা ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা আশ্বস্ত করে। কিন্তু এখন তারাও আর ফোন ধরছে না। আমরা চিন্তায় রয়েছি। ওরা আদৌ কী অবস্থায় রয়েছে, এখনও জানি না। পুলিশের কাছে বিষয়টি জানিয়েছি।’’

প্রশাসজনের তরফে খোঁজখবর নেওয়া চলছে। এই বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তল বলেন, ‘‘ওঁদের খোঁজ নেওয়ার সব রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সিকিম সরকারের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রেখে চলেছি আমরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন