জমি নিয়ে বিবাদে হোটেলে খুন যুবক

প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার জমির দখলকে ঘিরে দুই গোষ্ঠীর বিবাদে হোটেলের মধ্যে গুলি করে খুন করা হল এক যুবককে। শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ খড়িবাড়ি থানার চেকরমাড়ির ঘটনা। ঘটনাস্থল থেকে ৫০ মিটারের মধ্যেই বিহার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:০৫
Share:

সত্যেন প্রসাদ।

প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার জমির দখলকে ঘিরে দুই গোষ্ঠীর বিবাদে হোটেলের মধ্যে গুলি করে খুন করা হল এক যুবককে। শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ খড়িবাড়ি থানার চেকরমাড়ির ঘটনা। ঘটনাস্থল থেকে ৫০ মিটারের মধ্যেই বিহার।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম সত্যেন প্রসাদ (৩৮)। নিহত যুবক শিলিগুড়ির ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সক্রিয় তৃণমূল কর্মী সত্যেনকে খুনের অভিযোগে বিজেপি-র ১ নম্বর মণ্ডল সভাপতি হরেন্দ্র যাদব-সহ তিন জনকে পুলিশ খুঁজছে। রাতেই আবার হরেন্দ্রর ছেলে রঞ্জয় যাদবকে পুরানো একটি মোবাইল এবং সোনার মালা ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে।

ঘটনার পর থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘অস্ত্র নিয়ে রাজ্যে বিজেপি মিছিল করছে। সেই অস্ত্র দিয়ে মানুষও খুন হচ্ছে, শিলিগুড়ির ঘটনায় তা প্রমাণ হল। পুলিশ-প্রশাসনকে বলে অভিযুক্তদের ধরতে হবে।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, হোটেলে খুব কাছ থেকে সত্যেনকে মারার পর অভিযুক্তরা পাঁচ রাউন্ড শূন্যে গুলি চালিয়ে বিহারের দিকে পালিয়েছে। সত্যেনের নামেও পুরানো একটি খুনের মামলা ছিল। মূলত জমি কারবারী হিসাবে মাটিগাড়া ব্লকে সত্যেন এবং হরেন্দ্রর পরিচিত। প্রতিবেশী দু’জন একসময় একসঙ্গে থাকলেও গত পুরসভা ভোটে হরেন্দ্র ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির প্রার্থী হন। সত্যেন তৃণমূল শিবিরে থেকে যান। তার পরেই তৈরি হয় দুটি গোষ্ঠী।


শোকার্ত: ভেঙে পড়েছেন আত্মীয়। নিজস্ব চিত্র

পোকাইজোতে সাড়ে ৬ কাঠা জমি সত্যেনের দাদার নামে রয়েছে। সেই জমিতে তাঁর অংশ রয়েছে বলে হরেন্দ্র দাবি করছিল। তা নিয়ে দুই বছর ধরে আদালত, পুলিশে অভিযোগ চলছিল। নিহতের কাকা অজয়প্রসাদ জানান, শুক্রবার সত্যেন বিহারের গোপালগঞ্জে আদি বাড়িতে গিয়েছিল। শনিবার দুপুরে সেখান ফিরছিল। রাস্তায় খেতে রাতে হোটেলটিকে বসেছিল। সঙ্গে দুই সঙ্গী ছিল। সাদা গাড়ি নিয়ে অভিযুক্তরা আগে থেকে সেখানে ওৎ পেতে ছিল। সত্যেনের বাবা হরেশ্বর প্রসাদ বলেন, ‘‘ছেলেকে গুলি করার পর সঙ্গীর ফোন থেকে সত্যেন বাড়িতে হরেন্দ্রর কথা বলেছে। মাটিগাড়ার নার্সিংহোমে এনেও কিছু হল না।’’

নিহত এবং অভিযুক্তরা একই এলাকার হওয়ায় সকাল থেকে উত্তেজনা ছড়ায়। অস্বস্তিতে পড়ে বিজেপির জেলার সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ রায় চৌধুরী বলেছেন, ‘‘এখন তো কিছু হলেই বিজেপির নাম জড়াচ্ছে। আইন আইনের পথে চলবে।’’

ঘটনার সময় সত্যেনের সঙ্গে থাকা দুই সঙ্গীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি জানান। এলাকায় অভিযুক্ত হরেন্দ্রর বাড়ি সকাল থেকে ভিতর থেকে তালাবন্ধ। ডাকাডাকির পর লোহার গেটের ফাঁকা গিয়ে আত্মীয় শ্যাম যাদব বলেন, ‘‘আমরা কিছু জানি না। পুলিশকে জিজ্ঞাসা করুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন