অঙ্কুর। —নিজস্ব চিত্র।
রেল লাইনের মাঝখান থেকে উদ্ধার হওয়া বছর তিনের অঙ্কুর বর্মনকে শনিবার দুপুরে ভর্তি করানো হল কোচবিহার জেলা সদর এমজেএন হাসপাতালে। ফালাকাটা গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে এ দিন শিশুটিকে ‘রেফার’ করা হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, শিশুটির মাথায় স্ক্যান করানোর পরামর্শ দিয়েছেন চিকিত্সকেরা।
বৃহস্পতিবার রাতে গুমানিরহাট ও ফালাকাটা স্টেশনের মাঝে ঘোকসাডাঙা থানার দোলং চা বাগানের কাছে একটি রেললাইনের মাঝখান থেকে ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। ট্রেনে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তার মা প্রণতি বর্মনের দেহ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, “ছেলেকে নিয়ে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন মহিলা। মায়ের মৃত্যু হলেও বরাত জোরে বেঁচে গিয়েছে শিশুটি। কোচবিহার জেলা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সুব্রত হালদার বলেন, “ওই ঘটনার ঘোর থেকে বেরিয়ে এসে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে শিশুটির কিছুটা সময় লাগবে। ওর শারীরিক অবস্থার দিকে নজর রাখা হচ্ছে। চিকিত্সার কোনও খামতি রাখা হবে না।”
অঙ্কুরের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ফালাকাটা থেকে কোচবিহার জেলা হাসপাতালে পৌঁছনোর ফাঁকে গাড়িতে প্রায় আধ ঘণ্টা ঘুমনো ছাড়া অঙ্কুর সারা দিন প্রায় জেগেই ছিল। সারাক্ষণই মায়ের খোঁজ করছিল সে। বাড়ি ফেরার জন্য বাবাকে জড়িয়ে কান্নাকাটি করেছে সে। কখনও খেলনা দিয়ে বা কখনও গল্প বলে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা করলেও অঙ্কুরের কান্না থামানো যায়নি। খাবার সময়েও মায়ের খোঁজে বাড়ি ফেরার জন্য বায়না জুড়েছে সে। হাসপাতালের বারান্দায় কোলে তুলে তার বাবা অরুণবাবু অনেক বোঝানোর পর কিছুটা ভাত খেলেও সে ফের একই আবদার শুরু করেছে।