সাতদিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পর আদালতে অন্তর্বর্তী জামিন পেল বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা বিশ্বজিত্ রায় ওরফে বুলেট। এ দিন তাঁর হয়ে মালদহ আদালতে সওয়াল করেন যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি অম্লান ভাদুড়ি। এই ঘটনায় দল বুলেটকে বহিষ্কার করলেও আদতে জেলা নেতৃত্ব যে তাঁর পাশে রয়েছে সেই বার্তা স্পষ্ট বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও অম্লানবাবুর বক্তব্য, আইনজীবী হিসেবেই বুলেটের হয়ে সওয়াল করেছেন তিনি।
গত ৫ ডিসেম্বর ভুয়ো বিলের প্রতিবাদে স্মারকলিপি দিতে দলবল নিয়ে বিদুত্ দফতরে চড়াও হয়েছিল বহিষ্কৃত যুব তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি বুলেট। দফতরের বাইরে বিক্ষোভের পর তারা বিভাগীয় ম্যানেজার শৈবাল মজুমদারের ঘরে ঢুকে দুই সহকারি ইঞ্জিনিয়ার অনির্বাণ সাহা ও আলাড়ি বিজয় শঙ্করকে হেনস্থা করে। সহকারি ইঞ্জিনিয়ার অনির্বাণবাবুর কলার ধরে শাসানি দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। অফিসারদের হেনস্থা ও কলার ধরে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বুলেটের বিরুদ্ধে। ঘটনার রাতেই তাকে ৬ বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তার পরে বিদ্যুত্ দফতরও বুলেট ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করে। ঘটনার তিনদিন পর ৮ তারিখ থানায় আত্মসমর্পণ করে বুলেট। ওইদিন তাকে আদালতে পেশ করা হলে বিচারক সাতদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই সময় গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করে বুলেটের পরিবার। অম্লানবাবুর বিরুদ্ধেও অভিযোগের আঙুল তোলেন তাঁরা।
সোমবার বুলেটের হয়ে অম্লান বাবু সওয়াল করায় জেলা তৃণমূল তার পাশে রয়েছে বলে মনে করছেন দলের নেতা কর্মীদের একাংশ। দলের জেলা স্তরের এক নেতা জানান, প্রদেশ তৃণমূল নেতাদের সায় না থাকলে যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি বুলেটের হয়ে সওয়াল করতেন না। তবে অম্লান বাবু বলেন, “আমি একজন আইনজীবী। আইনজীবী হিসেবেই আমি দাঁড়িয়েছিলাম। এখানে দলের কোনও বিষয় নেই। তার বিরুদ্ধে দল আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও বুলেট অনুগামীদের অনেকেই এদিন সকাল থেকেই আদালত চত্বরে ভিড় জমান। সরকারপক্ষের আইনজীবী জয়ন্ত মজুমদার বলেন, “এ দিন ধৃতকে সিজেএম প্রদীপ কুমার রায়ের এজলাসে তোলা হলে বিচারক তাকে দেড় হাজার টাকা বন্ডে অন্তর্বর্তী জামিন দেন।” বুলেটের দাদা অমিতাভবাবু বলেন, “আইন আইনের কাজ করেছে। তবে ভাই জামিন পাওয়ায় আমরা খুশি।”