অনলাইনে পুজো চালু হল মদনমোহন মন্দিরে

কলেজ ফেল। পাশ করল মন্দির। অনলাইন পরিষেবা চালু করার এমনই রিপোর্ট কার্ড এ রাজ্যে। অনলাইনে কলেজে ভর্তি এখনই শুরু হচ্ছে না, নতুন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানালেন বুধবার। আর এ দিনই কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরে অনলাইন পুজো চালু হল। প্রথম দিন জমা পড়ল ২৫০০ টাকা।

Advertisement

অরিন্দম সাহা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৪ ০১:২৯
Share:

কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরে অনলাইনে পুজোর উদ্বোধনে জেলাশাসক মোহন গাঁধী। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

কলেজ ফেল। পাশ করল মন্দির।

Advertisement

অনলাইন পরিষেবা চালু করার এমনই রিপোর্ট কার্ড এ রাজ্যে। অনলাইনে কলেজে ভর্তি এখনই শুরু হচ্ছে না, নতুন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানালেন বুধবার। আর এ দিনই কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরে অনলাইন পুজো চালু হল। প্রথম দিন জমা পড়ল ২৫০০ টাকা।

পুরীর জগন্নাথ মন্দির, নয়াদিল্লির লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দির, মুম্বইয়ের সিদ্ধিবিনায়ক, কাশীর বিশ্বনাথ মন্দিরে অনলাইনে পুজো দেওয়া যায় অনেক দিন। গয়ায় অনলাইনে পিণ্ডদানও করা যায়। এ বার কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের উদ্যোগে মাউসে ক্লিক করলেই তিথি বা নির্ঘণ্ট মেনে পুজো দেওয়া যাবে।

Advertisement

এ রাজ্যে মন্দিরে অনলাইন পুজো অবশ্য এটাই প্রথম নয়। রাজ্যে তারাপীঠের কালীমন্দিরেও অনলাইনে পুজো দেওয়া যায়। সাধারণ পুজো ৫১ ডলার, আর ভোগের জন্য ১০১ ডলার দিয়ে প্রবাসীরাও পুজো দিতে পারেন ‘তারাপীঠ ডট কম’ ওয়েবসাইটে। উত্তরবঙ্গে এই প্রথম এই পরিষেবা চালু হল। মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের আমলে ১৮৯০ সালে কোচবিহারে বৈরাগী দিঘির পাড়ে ওই মন্দিরের উদ্বোধন হয়। ১৯৯৪ সালে মদনমোহনের প্রাচীন বিগ্রহ চুরির ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কোচবিহার। পরে নতুন বিগ্রহ তৈরি হয়।

মদনমোহন মন্দিরে বাইশ রকম পুজো দেওয়া যাবে। খরচ ৫০০ টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা। মদনমোহন দেবের পুষ্যাভিষেক যাত্রা, চন্দন যাত্রা ও দমনভঞ্জ যাত্রা পুজোর জন্য খরচ ৫০০ টাকা। সন্ধ্যারতি, রাতের ভোগ ২০০০ টাকা, অন্নভোগ ৫০০০ টাকা, বিকেলের ভোগের জন্য ১৫০০ টাকা। দোলযাত্রা, রথযাত্রার মতো বিশেষ দিনে পুজোর খরচ আলাদা। মা ভবানী, মা কালী ও জয়তারা দেবীর পুজোর খরচ ২০০০ টাকা।

অনলাইনে নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক আকাউন্টে টাকা জমা দিলে তাঁর নির্দিষ্ট সময়ে দাতার নাম, গোত্র উল্লেখ করে পুজো দেবেন পুরোহিত। গোটা দৃশ্য ভিডিওতে তুলে ভক্তের ই-মেলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কোচবিহারের সদর মহকুমা শাসক তথা ট্রাস্ট বোর্ডের সদস্য বিকাশ সাহা জানান, পার্সেল পাঠানোর অতিরিক্ত খরচ দিলে বাড়িতে পুজোর শুকনো প্রসাদ, প্রসাদী ফুলও পৌঁছে যাবে।

দেবত্র ট্রাস্ট সূত্রেই জানা গিয়েছে, অনলাইন পুজোর জন্য একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের সঙ্গে বোর্ডের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করার ব্যাপারে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করেছেন দেবোত্তর কর্তৃপক্ষ। ওই ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইট থেকে পুজোর খরচ-সহ সব তথ্য পাওয়া যাবে। ওই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দেশের ৪২টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে তাদেরমাধ্যমে অনলাইন দান কিংবা পুজোর খরচ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সেই তালিকায় উত্তরবঙ্গ থেকে এটিই প্রথম মন্দির।

তবে সশরীরে না পুজো দিলে কি মদনমোহনের কাছে পৌঁছবে ভক্তের প্রার্থনা? মন্দিরের এক পুরোহিত বললেন, “সশরীরে এসে পুজো দেওয়ায় তৃপ্তি আলাদা। দূরে থাকলে তা হয়তো পাওয়া যাবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন