শিলিগুড়ি আদালতের নতুন ভবন নির্মাণ নিয়ে জটিলতা কাটল না। শনিবার শিলিগুড়িতে ফের হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুুলা চেল্লুরের সঙ্গে দেখা করলেন আইনজীবী ও মুহুরি দু’পক্ষই। আইনজীবীরা সমস্ত রকম চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানালেও মুহুরিরা না সরলে কিছু করা সম্ভব নয় বলে একটি সরকারি সূত্রে দাবি করা হয়েছে। বর্তমান জায়গা থেকে সরে গেলে তাঁদের পুনর্বাসন কোথায় হবে, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন মুহুরিরা। তাই তাঁরা প্রধান বিচারপতির কাছে প্রতিশ্রুতি চাইতে গিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। নিজেদের মত জানাতে মুহুরিরা ১০-১২ দিন সময় চেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
এদিন শিলিগুড়ির চম্পাসারিতে সার্কিট হাউসে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে প্রথমে দেখা করেন শিলিগুড়ি বার অ্যসোসিয়েশনের সদস্যরা। বার অ্যসোসিয়েশনের সম্পাদক চন্দন দে বলেন, “আমরা আমাদের তরফ থেকে সব রকম সহযোগিতার কথা জানিয়েছি। মুহুরিদের সঙ্গে কী কথা হয়েছে তাও জানিয়েছি। এখন সমস্তটাই মুহুরি এবং হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের উপরে নির্ভর করছে।”
তবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী আইনজীবী ও মুহুরিদের নিয়ে বসে এর একটা সন্তোষজনক সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, “জানুয়ারি মাসের শেষেই সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হবে।” তবে মুহুরিদের তরফে কেউই এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁরা এখন অপেক্ষা করছেন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের। শিলিগুড়ি আদালতের মুহুরি অ্যসোসিয়েশনের সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় সরকার বলেন, “আমাদের বর্তমান ভবনটি রাজ্য সরকারের সহায়তায় করা হয়েছিল। ফলে নতুন জায়গায় যাওয়ার আগে সব দিক খতিয়ে দেখতে হবে। রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরই এ বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত জানাব।” তার আগে সাধারণ সভা ডেকে বিষয়টি আলোচনা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
শিলিগুড়ি আদালতের বর্তমান চত্বর থেকে অন্য কোথাও আদালত ভবন সরানো হলে সেখানে তাঁরা যাবেন না বলে ঘোষণা করে আন্দোলনে নেমেছেন আইনজীবীরা। এই দাবিতে সম্প্রতি দেড় মাসের বেশি সময় কর্মবিরতি পালন করেন শিলিগুড়ি আদালতের আইনজীবীরা। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে শিলিগুড়ি আদালত চত্বর ঘুরে যান হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। তিনি যাওয়ার পরে কর্মবিরতি তুলে নেওয়া হয়। গত ১৯ জানুয়ারি কলকাতায় ফের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেন বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। এর আগে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অন্য জায়গায় আদালতের জমি দেখা হচ্ছে বলে জানানোয় ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল আইনজীবীদের মধ্যে। পরে অবশ্য মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, আইনজীবীরা না চাইলে আদালত স্থানান্তর হবে না।