আন্দোলন করায় নেতাকে সাসপেন্ড করল শঙ্কু

অধ্যক্ষের বাড়ি ঘেরাও কাণ্ডে অস্বস্তি চাপা দিতে জলপাইগুড়ির এক ছাত্র নেতাকে সাসপেন্ড করল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। মালদহের সামসি কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে ঘেরাও বিক্ষোভের ঘটনাতে স্থানীয় নেতৃত্বের ঘাড়েই দায় চাপিয়ে দিয়েছেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা। তাঁর বক্তব্য, “স্থানীয় নেতারা নিজেদের স্বার্থে কলেজের ছাত্রছাত্রীদের ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছেন।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৩৫
Share:

অধ্যক্ষের বাড়ি ঘেরাও কাণ্ডে অস্বস্তি চাপা দিতে জলপাইগুড়ির এক ছাত্র নেতাকে সাসপেন্ড করল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। মালদহের সামসি কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে ঘেরাও বিক্ষোভের ঘটনাতে স্থানীয় নেতৃত্বের ঘাড়েই দায় চাপিয়ে দিয়েছেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা। তাঁর বক্তব্য, “স্থানীয় নেতারা নিজেদের স্বার্থে কলেজের ছাত্রছাত্রীদের ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছেন।”

Advertisement

রবিবার শিলিগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে শঙ্কু দাবি করেছেন, কোনও অধ্যক্ষ, শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীর বাড়ি ঘেরাও করা বা সেখানে চড়াও হওয়াকে টিএমসিপি সমর্থন করে না। দলীয় তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট দেখে টিএমসিপি-র রাজ্য নেতৃত্ব মনে করছেন, জলপাইগুড়ির আনন্দচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষের বাড়ি ঘেরাও করা ঠিক হয়নি। এই ঘেরাও আন্দোলনে যুক্ত থাকার জন্য টিএমসিপি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক শৌভিক চৌধুরীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে শঙ্কু জানিয়েছেন। শৌভিক ওই কলেজেরই অস্থায়ী কর্মী। তাঁর বক্তব্য, “সংগঠনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।”

ছাত্র ভর্তির দাবিতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর জলপাইগুড়ি আনন্দচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষের বাড়ি ঘেরাও করেছিলেন টিএমসিপি-র সমর্থকেরা। বাড়ি সামনে অধ্যক্ষকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। আঙুল উঁচিয়ে শাসনি দিতেও দেখা যায় শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের কিছু নেতা-সমর্থকদের। ঘটনার পরেই জেলার শিক্ষানুরাগী মহল তো বটেই, দলের মধ্যেও সমালোচনা শুরু হয়। চাপে পড়ে তদন্ত কমিটি করে কী ঘটেছে তা খতিয়ে দেখার কথা ঘোষণা করে টিএমসিপি। তারপরে এ দিন উত্তরবঙ্গের সব জেলার ছাত্র নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে এই পদক্ষেপের কথা শঙ্কুদেব নিজেই ঘোষণা করেছেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “দলের থেকে একটি কমিটি গড়ে তদন্ত করা হয়েছিল। তার ভিত্তিতেই একটি প্রাথমিক রিপোর্ট দলনেত্রী এবং ছাত্র সংগঠনের নেতাকে পাঠানো হয়েছিল।” মালদহের সামসি কলেজের ঘটনাতেও টিএমসিপিকে অস্বস্তিতে পড়তে হয়। ছাত্র ভর্তির দাবিতে গত শুক্রবার সামসি কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছিল টিএমসিপি সমর্থকদের বিরুদ্ধে। শঙ্কুর সাফাই, “এই ঘটনাগুলি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে।” সামসি কলেজ ইউনিটে দলের সভাপতি মহম্মদ সানাউল্লাহরও দাবি, “সংগঠনের কয়েকজন বহিরাগত নেতা এসে কলেজে গোলমাল পাকাচ্ছে। সংগঠন চাইলে তাঁদের নাম জানাব। ওদের জন্য সংগঠনের বদনাম হচ্ছে।” রতুয়া ১ ব্লকের টিএমসিপি-র সভাপতি মহম্মদ সামাদ আলি অবশ্য এ দিনও দাবি করেছেন, “কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরাই তাঁদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করেছেন। ভাঙচুর বা গোলমালও হয়নি।”তবে জলপাইগুড়ি থেকে সামসি, শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের নিয়ন্ত্রণের রাশ যে নেতৃত্বের হাত থেকে আলগা হয়ে গিয়েছে, তা এ দিনের বৈঠকের সিদ্ধান্তেই মালুম হয়েছে বলে তৃণমূলেরই কিছু নেতার দাবি। কোনও এলাকায় বা কলেজে সংগঠনের নেতাকর্মীরা যাতে হঠকারী ভাবে কোনও আন্দোলনে জড়িয়ে না পড়েন, সে জন্য এ দিন উত্তরবঙ্গ কো অর্ডিনেশন কমিটি করা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement