আলিপুরদুয়ার শহরে নারায়ণ দে-র তোলা ছবি।
আলিপুরদুয়ার শহরের অধিকাংশ পুর ওয়ার্ডে নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল হওয়ায় মশার উপদ্রব প্রচণ্ড বেড়ে গিয়েছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। তাঁরা জানান, সন্ধ্যার হলেও মশার দাপটে ঘরে বসে থাকা কষ্টকর। বাসিন্দারা জানান, শহরের হাসপাতাল এলাকা থেকে চৌপথির ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কিংবা নিউটাউন বাজারের কাছে ২ নম্বর ওয়ার্ড, সব জায়গায় একই পরিস্থিতি। সর্বত্রই নর্দমা নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় কারণে সেখানে গজিয়ে উঠেছে নানা ধরনের গাছপালা।
১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা আইনজীবী সোমশঙ্কর দত্ত এই প্রসঙ্গে বলেন, “প্রতি দিন সন্ধ্যা নামলেই মশার উৎপাতে বাড়িতে এবং রাস্তায় টেকা দায়। কোথাও কিছুক্ষণ শান্তিতে বসা যাচ্ছে না।” হাসপাতাল লাগোয়া এলাকার ব্যবসায়ী সৈকত বসু জানান, অনেক সময়ই নর্দমার জমে থাকা জলের দুর্গন্ধে নাকে রুমাল চেপে ধরতে হচ্ছে। মশার উপদ্রব দিনের বেলাতেও রয়েছে। দিনভরই প্রায় মশা মারার ওষুধ জ্বালিয়ে রাখতে হয়।
মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক তথা শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পার্থপ্রতিম দাস বলেন, “গত বছর এই সময় শহরে ব্যাপক ভাবে ম্যালেরিয়ার প্রভাব দেখা দিয়েছিল। শহরের বিভিন্ন এলাকায় নর্দমাগুলির জল নিকাশি বন্ধ থাকায় মশার সঙ্গে মাছির উৎপাতও বেড়ে গিয়েছে। তাই এর থেকে নানা ধরনের রোগ ছড়ানোরও সম্ভাবনা রয়েছে। কোনও বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার আগেই পুরসভার দ্রুত বিষয়টি দেখা দরকার।”
পুরসভার সিপিএমের চেয়ারম্যান অনিন্দ্য ভৌমিক সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “মূলত প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের জন্যই নর্দমাগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মাঝে মাঝে সেগুলি পরিষ্কার করা হলেও ফের তা ভরাট হচ্ছে। আমার নিজের ওয়ার্ডেও মশার দাপট প্রচণ্ড বেড়ে গিয়েছে।” পুরপ্রধান জানিয়েছেন, মশা মারার তেল প্রয়োগ করা হলেও তাতে খুব একটা ফল মেলেনি। নর্দমাগুলি নিয়মিত পরিষ্কার ও প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করার বিষয়ে পুরসভার পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে শহরের নানা জায়গায় থাকা বড় নালা পরিষ্কার করার কাজে হাত দেওয়া হয়েছে।
পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দীবাকর পাল ওই প্রসঙ্গে বলেন, “চেয়ারম্যান মশা মারার কথা মুখে বলছেন। নর্দমা সাফাই থেকে মশা মারার তেল প্রয়োগ কিংবা মেশিনের মাধ্যমে ধোঁয়া দেওয়া, কিছুই হচ্ছে না। সন্ধ্যা নামলেই মশার কামড়ে অতিষ্ট হচ্ছেন শহরের মানুষ। আমরা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।”