কিরণচন্দ্র নৈশ ফুটবলের একটি মুহূর্ত। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। শিলিগুড়ির এই ফুটবল টুর্নামেন্টের আগের ম্যাচগুলির ঝলক দেখতে অ্যাপ্ল অ্যাপ স্টোর (আইফোন/ আইপ্যাড) অথবা গুগল প্লে স্টোর থেকে ABP AP Appটি ডাউনলোড করে এই ছবিটি স্ক্যান করুন।
প্রথম ম্যাচের সময়ই নড়বড়ে দেখিয়েছিল। এ দিন শক্ত প্রতিপক্ষের সামনে পড়ে শিলিগুড়ি উল্কা ক্লাবের রক্ষণ নড়ে গেল প্রথর্মাধের ৮ মিনিটেই। এত দ্রুত প্রথম গোলের জন্য ঘাবড়ে গিয়েই হোক বা প্রতিপক্ষের অতিকায় বিদেশীদের দেখেই হোক প্রথমার্ধে আর মাথাই তুলতে পারল না তারা। এই সুযোগে নিশ্চিন্তে আরও দুটি গোল বিপক্ষের জালে রেখে এল গ্লোব ট্রটার্স স্পোর্টিং ক্লাব (জিটিএসসি)। প্রথমার্ধে তৈরি ৩-০ গোলের এই ব্যবধান দ্বিতীয়ার্ধের আপ্রাণ চেষ্টাতেও মুছতে পারল না তাঁরা। দ্বিতীয়ার্ধে সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে পেনাল্টি থেকে একমাত্র গোল শোধ করে উল্কা। এই ম্যাচ জিতে প্রথম দল হিসেবে কিরণচন্দ্র নৈশ ফুটবলের ফাইনালে চলে গেল জিটিএস।
দ্বিতীয়ার্ধের খানিক আগে থেকেই ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়। পরেও তা বেশ কিছুক্ষণ চলে। অথচ দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম আধ ঘন্টা মাঠ শুধুই উল্কাময়। এই খেলা দেখে তখন উল্কা দর্শকরা হাত কামড়াচ্ছেন। প্রথমার্ধে এর অর্ধেক খেললেও ফল এমন হয় না। প্রবল চাপের মুখে তখন জিটিএসের বিদেশিরা মাথা গরম করে ফেলছেন। এই সময় দু’পক্ষই প্রবল চাপের মুখে একাধিক ফাউল করে বসে। ফলস্বরূপ হলুদ কার্ডের ছড়াছড়ি এই অর্ধে। দ্বিতীয়ার্ধের ৯ মিনিটে বক্সের মধ্যে উল্কার আক্রমণের এক খেলোয়াড়কে ফাউল করে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি জিটিএস টিম ম্যানেজমেন্ট। এই সময় চতুর্থ রেফারিকে আসরে নামতে হয় কোচ সহ ড্রেসিংরুমের খেলোয়াড়দের শান্ত করতে। কিন্তু ম্যাচ জিতেও তাঁদের রাগ যায়নি।
খেলা শেষ হওয়ার পর দলের পক্ষ থেকে মহকুুমা ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃপক্ষকে মৌখিক অভিযোগ জানানো হয়। জিটিএস কোচ দেবজ্যোতি নাহা বলেন, “ম্যাচ পরিচালনার ত্রুটির কারণে খেলার গতি নষ্ট হয়। এ সময় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত আমাদের বিপক্ষে গিয়েছে। না হলে ব্যবধান আরও বাড়তে পারত।” তবে তাঁর দল পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলায় তিনি খুশি। তিনি জানান, এ দিন দুপুরে বৃহস্পতিবারের আইএসএল ম্যাচের চেন্নাইয়ের খেলার ভিডিও দেখিয়ে খেলোয়াড়দের বলা হয়েছিল, প্রথম দশ মিনিটে গোল চাই। তাহলেই বিপক্ষকে চাপে ফেলা যাবে। তা এ দিন কাজে লেগে যাওয়াতে জয় সহজ হয়েছে বলে দেবজিতবাবু মন্তব্য করেন।
এ দিন ম্যাচ হেরে অবশ্য নিজের দলের বিদেশিদের দুষলেন উল্কা কোচ বিধান মণ্ডল। তিনি বলেন, “বিপক্ষের বিদেশীরাত বাল খেলেছেন আমাদের দলেরগুলো ডুবিয়েছে।” তাই তিনি ক্লাব কর্তাদের জানিয়ে দিয়েছেন, আগামীবার তাঁর দল শুধুই কলকাতা-শিলিগুড়ির বাঙালিদের দিয়ে তৈরি করবেন। তাঁর দাবি, “এর চেয়ে খারাপ আর কী খেলবে।”
এ দিন শুরু থেকেই আক্রমণ শানাতে থাকেন জিটিএস ফুটবলাররা। ৮ মিনিটেই ওয়াইদি একটি গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। গোলের পর বল মাঝমাঠে বসানোর পর, গোল পর্যন্ত যেতে যতটা সময় লাগে ততটা সময়ে ফের গোল করেন শিলিগুড়ির ছেলে প্রকাশ রায়। প্রকাশ যে গোলটা ভাল চেনেন তার প্রমাণ দেন প্রথমার্ধের শেষে ৩৯ মিনিটে আরও একটি গোল করে। পরের অর্ধেও বেশ কয়েকটি সুযোগ এলেও ব্যবধান বাড়েনি।