নকশালবাড়ি থানার ওসি’কে গ্রেফতারের দাবিতে তৃণমূলের বিক্ষোভ। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
নকশালবাড়ি থানার ওসি’র শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে নামল তৃণমূল কংগ্রেস। মঙ্গলবার অবশ্য থানার পরিবর্তে শিলিগুড়িতে মহকুমা পরিষদে গিয়ে বিক্ষোভ দেখায় নকশালবাড়ি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা। সেখানে দার্জিলিঙের জেলাশাসক পুনীত যাদবের সঙ্গে দেখা করে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে একটি স্বারকলিপি পাঠান দলের নেতারা।
পুলিশের বিরুদ্ধে খোদ শাসক দলের আন্দোলন ঘিরে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দলীয় বা প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা না করে প্রকাশ্যে দলের একাংশের ওই আন্দোলন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে।
দলের জেলার কমিটির কয়েকজন নেতা জানান, পুলিশের বিরুদ্ধে নকশালবাড়ির ব্লক সভাপতি গৌতমবাবুর আন্দোলন নতুন কিছু নয়। বেশ কিছুদিন আগে বাগডোগরা থানার এক ওসির বিরুদ্ধেও তিনি একইভাবে আন্দোলন করেছিলেন। তখনও রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল তৃণমূল। গৌতমবাবুর দাবি, “মানুষের স্বার্থে পুলিশের একাংশের কার্যকলাপ প্রকাশ্যে আনতে চাই বলেই আন্দোলন করি।”
তৃণমূলের ব্লক সভাপতি’র কথায়, “আমরা দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলিনি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকেও জানাইনি। আসলে ওসি বিজেপির হয়ে কাজ করছেন। সেই সঙ্গে একাধিক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। তাই এই ঘটনা প্রকাশ্যে আনতে চাইছি।” তৃণমূলের জেলা নেতারা বিষয়টি জানেনই না বলে জানিয়েছেন। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলার নেতা কৃষ্ণ পাল বলেন, “ওসি হয়ত সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছেন তাই দলের নেতারা সরব হতে বাধ্য হয়েছেন।”
দার্জিলিং জেলা পুলিশের সার্কেল ইন্সপেক্টর রাজেন ছেত্রী কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। আর যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই ওসি সৌরভ সেন বলেন, “অনেকেই বিভিন্ন বেআইনি কাজকর্মে জড়িত। নিজেদের বাঁচানোর জন্য রাজনৈতিক দলকে ঢাল করছেন।”
প্রসঙ্গত, মাসখানেক আগে নকশালবাড়ি থানার সামনে ওসির বদলির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের নেতৃত্বরা। এদিন তৃণমূলের আন্দোলন নিয়ে সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “ওই ওসির থানার দায়িত্বে থাকার যোগ্যতা নেই। মিথ্যা মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষকে ফাঁসিয়ে দিচ্ছেন। উনি তৃণমূলের কথাতেই কাজ করেন। নিজেদের গা থেকে অভিযোগ ঝেড়ে ফেলতেই তৃণমূল আন্দোলন করছে।”
বিজেপির দাজির্লিং জেলা সভাপতি রথীন বসু’র কথায়, “দুই দলেরই ক্ষমতা ভোগ করার অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। তাই কোনও ওসি কথা না শুনলে তাঁকে সরানোর জন্য লোক দেখানো আন্দোলন করে। আর ইচ্ছাকৃতভাবে এখন সব কিছুতে বিজেপির নাম জড়ানো হচ্ছে।”