ধৃত সাধু দাস।—নিজস্ব চিত্র।
কেএলও লিঙ্কম্যান সন্দেহে সাধু দাস নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে মালদহের হবিবপুর থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে ঋষিপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাধু কেএলও-র জঙ্গি নেতা মালখান সিংহের অন্যতম সঙ্গী বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ জানায়, সাধুর বাড়ি হবিবপুর থানার আগ্রা হরিশ্চন্দ্রপুরে। শুক্রবার সাধুকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তার ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা পুলিশ রাজেশ যাদব বলেন, “ধৃত সাধু দাস মালখান সিংহের অন্যতম সহযোগী। ওকে দীর্ঘদিন ধরে খোঁজা হচ্ছিল।”
জেলা পুলিশের দাবি, সাধু একসময় কেপিপি-র সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি কেপিপি ছেড়ে কেএলও জঙ্গি মালখান সিংহের হয়ে হবিবপুর, বামনগোলা, গাজল এলাকায় ব্যবসায়ী, শিক্ষক ও সরকারি কর্মীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। পুলিশের জালে মালখানের একের পর এক সঙ্গী ধরা পরার পর পুলিশের তাড়া খেয়ে কিছু দিন ধরে সে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় ঋষিপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে লুকিয়ে ছিল। রাতে একটি গোপন ডেরায় চার সঙ্গীকে নিয়ে বৈঠক করছিল সাধু।
পুলিশের অনুমান, আসন্ন লোকসভা নিবার্চনে সময় জেলায় কোনও নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা করতে ওই বৈঠক করছিল সাধু। তবে স্থানীয় সূত্রে খবর, তার সঙ্গী চারজন পালিয়ে গিয়েছে। যদিও ওই চার জনের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সরকারি ভাবে জেলা পুলিশ কর্তারা স্বীকার করেননি। জেলা পুলিশ সুপার শুধু বলেন, “সাধুকে জেরা করে মালখান ও বাকিদের খোঁজ করা হবে।”
এদিকে পুলিশের বিরুদ্ধে মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ করেছেন মালখানের বাবা শচীন মন্ডল। তাঁর অভিযোগ, “আমার ছেলে দেশদ্রোহী হলে পুলিশ ওকে ধরুক। গুলি করে মারুক। আমাদের আর কিছু যায় আসে না। কিন্তু ওর দোষের সাজা আমরা কেন ভোগ করব? দুপুর-রাত নেই বাড়িতে পুলিশ আসছে। মালখানের খোঁজ জানতে চাইছে। আবার আমাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা এক বছর ধরে মালখানের কোনও খোঁজ জানি না। তার পরেই আমাদের কেন হেনস্থা করছে, তা বুঝতে পারছি না। কয়েকদিনের মধ্যে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হব।”
এই অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “যখন আমরা খবর পাচ্ছি মালখান সিংহ গ্রামে ঢুকেছে, তখনই আমরা তার বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছি। মালখানের বাবার অভিযোগ ঠিক নয়। তবে অভিযোগ যখন উঠেছে, অবশ্যই বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।” পুলিশ সূত্রের খবর, মালখান সিংহরা চার ভাই, এক বোন। বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। মালখান বড়। কেএলও জঙ্গি সন্দেহে মালখান সিংহের মেজভাই যাদব মণ্ডলকে পুলিশ কিছু দিন আগে গ্রেফতার করেছে। ছোট ভাই কাপড়ের ব্যবসা করেন। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের ভয়ে তিনি বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে দাবি। সেজ ভাই কলকাতায় কর্মরত।