কংগ্রেস-তৃণমূল সংঘর্ষে ফের উত্তপ্ত নওদা যদুপুর, আহত ১

বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে দিয়ে এক কংগ্রেস কর্মীকে গুলি করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার ভোরে কালিয়াচকের নওদা যদুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে। গত কয়েকদিন ধরেই কংগ্রেস-তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ-পাল্টা সংঘর্ষে মোজামপুর, নওদা যদুপুর এলাকায় উত্তেজনা চলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:২০
Share:

বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে দিয়ে এক কংগ্রেস কর্মীকে গুলি করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার ভোরে কালিয়াচকের নওদা যদুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে। গত কয়েকদিন ধরেই কংগ্রেস-তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ-পাল্টা সংঘর্ষে মোজামপুর, নওদা যদুপুর এলাকায় উত্তেজনা চলছে। গত রবিবার দু’দলের মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় তিন ঘণ্টা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ ছিল।

Advertisement

এ দিন গুলি চালানোর অভিযোগে ফের উত্তজনা তৈরি হয় নওদা যদুপুরে। কংগ্রেসের অভিযোগ, ভোর চারটে নাগাদ ইব্রাহিম মোমিন নামে দলের এক সমর্থককে বাড়ি থেকে ডেকে কিছুটা দূরে নিয়ে গিতে তৃণমূল সমর্থকরা গুলি চালায়। পায়ে এবং পেটে গুলি লাগার পরে গুরুতর জখন ইব্রাহিমকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। মেডিক্যাল কলেজ থেকে তাঁকে কলকাতায় ‘রেফার’ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও তাঁকে বর্তমানে মালদহের একটি নার্সিংহোমেই ভর্তি করানো হয়েছে। ঘটনার পরে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখ-সহ অন্যদের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে। যদিও তৃণমূলের তরফে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে বিষয়টি কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে দাবি করেছে।

এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে জখম ইব্রাহিম মোমিনের বিরুদ্ধেও খুন সংঘর্ষ-সহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গুলি চালানোর ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি শুরু হয়েছে। গুলিবিদ্ধের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ রয়েছে। সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

Advertisement

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে কংগ্রেস কর্মী ইব্রাহিমের দুই পরিচিত বন্ধু তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। তিনি বাড়ি থেকে বের হতেই তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখের অনুগামীরা তাঁকে আমবাগানে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। সেখান থেকে পালাতে গেলে তাঁকে লক্ষ করে পরপর গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। ইব্রাহিম জানান, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনি চিৎকার করলে তৃণমূল কর্মীরা পালিয়ে যান। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করান। এ দিন হাসপাতালে শুয়ে ইব্রাহিম অভিযোগ করে বলেন, “তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখ, সাদিকুল, রফিক শেখরা আমার উপর হামলা করেছে। আমি পালিয়ে না এলে ওরা আমাকে খুন করে ফেলত।”

এ দিনের ঘটনার পরে স্থানীয় কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী অভিযোগ করেন, “নওদা যদুপুর, মোজমপুরে পুলিশী মদতে তৃণমূল আশ্রিত দুস্কৃতীরা সন্ত্রাস চালাচ্ছে। যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছে তাঁদের উপরেই তৃণমূল হামলা চালাচ্ছে।” তবে নওদা যদুপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “তৃণমূল এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে এনেছিল। কংগ্রেস এলাকায় অশান্তি ছড়াতে চাইছে। নিজেদের মধ্যে গোলমালের জেরে ইব্রাহিমকে ওদের দলের লোকেরাই গুলি করেছে।”

গত পঞ্চায়েত নিবার্চনে ২৩ আসনের নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ২৩ আসনই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল দখল করে। এককভাবে গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করার পর নওদা যদুপুরের প্রধান কে হবে তা নিয়ে দলে দ্বন্দ্বের জেরে একাংশ নেতারা দল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন। এক সপ্তাহ আগে কংগ্রেস কর্মীদের বিরুদ্ধে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির উপর হামলার অভিযোগ ওঠে। হামলায় এক তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। রবিবার ফের দু’দলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। জাতীয় সড়কের ধারে বেশকয়েকটি দোকান এবং একটি বাইক পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন এ দিন দাবি করে বলেন, “কে কাকে গুলি করেছে জানি না। তবে জেলা পুলিশ সুপার আমাকে জানিয়েছেন গুলিবিদ্ধ কংগ্রেস কর্মীর বিরুদ্ধে খুন-সহ অনেক মামলা রয়েছে।আমরা খুন সন্ত্রাসে বিশ্বাস করি না। যারা গুলি চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারকে বলেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন