লোকসভা ভোটের ফলে তৃণমূলের দখলে থাকা কোচবিহার পুরসভার ২০টি ওয়ার্ডের ১০টিতেই এগিয়ে বিজেপি। তৃণমূল ৮টিতে ও বামেরা ২টি ওয়ার্ডে প্রথম স্থানে। যদিও গোটা কেন্দ্রের হিসেব অনুযায়ী বিজেপি এ বার তৃতীয় স্থানে রয়েছে। তা ছাড়া গত পুর নির্বাচনে একটি ওয়ার্ডেও জিততে পারেনি বিজেপি। সেখান থেকে এই সাফল্যে উজ্জীবিত বিজেপি নেতারা। এই অবস্থায় আগামী ২০১৫ সালের পুরসভা ভোটকে ‘পাখির চোখ’ করে এগোতে তৎপর বিজেপি নেতারা। আর ধাক্কা সামলে ‘দুর্গ’ বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন শাসক দলের নেতারাও। বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস শিবির অবশ্য লোকসভা ভোটে এই বিপর্যয়ের জন্য শুধু ‘মোদী হাওয়া’কে দায়ী করেছেন। বিজেপি শিবিরের পাল্টা দাবি, মোদী হাওয়ার পাশাপাশি এই পুরসভায় অনুন্নয়নের জন্যও ভোটাররা বিজেপি-কেই যোগ্য বিকল্প মনে করছে।
পুরসভার ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ১২, ১৫, ১৯ এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ডে প্রাপ্তভোটের নিরিখে এক নম্বরে আছেন বিজেপি প্রার্থী। বামেরা ১৪ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে লিড পেয়েছেন। বাকি ৮টি ওয়ার্ডে তৃণমূল এক নম্বরে। বিজেপি-র জেলা সম্পাদক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “মোদী-হাওয়া তো প্রবল ভাবে ছিলই। সামগ্রিক ভাবে পুরসভার উন্নয়ন বিমুখতা, নাগরিক পরিষেবার ব্যর্থতা এবং সুবিধাবাদী রাজনীতির বিরুদ্ধে মানুষ ১০টি ওয়ার্ডে আমাদের এগিয়ে রেখেছেন। তাই ২০১৫ সালের পুরসভার ভোটের প্রস্তুতিতে আমাদের উৎসাহ অনেকটাই বেড়েছে।”
লোকসভার ফলে দেখা যাচ্ছে বাম থেকে তৃণমূল কংগ্রেস, পুরসভার বহু নেতানেত্রী নিজেদের ওয়ার্ডে ধরাশায়ী হয়েছেন। দুই দলই ফল বিশ্লেষণ শুরু করেছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “এই পুরবোর্ড কিছু দিন আগে একক ভাবে আমাদের হাতে এসেছে। উন্নয়নের মাধ্যমেই শহরবাসীর মন জয় করব।” আর পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের মহানন্দ সাহা বলেছেন, “বিরোধীদের জেতা ওয়ার্ডে উন্নয়নে বৈষম্য ও মোদী হাওয়া মিলিয়ে এমন ফল হয়েছে।” কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি শ্যামল চৌধুরীর দাবি, “মোদী হাওয়ায় এই ফল। পুরভোটে ফল ধরে রাখার মতো সাংগঠনিক ক্ষমতা বিজেপি-র নেই। আমাদের সংগঠনকে নতুন করে সাজতে হবে।” ২০ আসনের পুরসভায় ২০১০ সালের নির্বাচনে কংগ্রেস ৮টি, তৃণমূল ৩ ও বামেরা ৯টি আসনে জয়ী হয়। কংগ্রেস ও তৃণমূল বোর্ড গড়ে। বীরেন কুণ্ডু কংগ্রেস চেয়ারম্যান ও তৃণমূলের আমিনা আহমেদ ভাইস চেয়ারপার্সন হন। গত বছর কংগ্রেস কাউন্সিলরদের নিয়ে পুর চেয়ারম্যান বীরেনবাবু তৃণমূলে যোগ দেন। দেড় দশক কংগ্রেসের দখলে থাকা পুরসভা তৃণমূল দখলে যায়। ২ বাম কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে উপ নির্বাচন জেতে তৃণমূল। আসনটি খালি হয় কাউন্সিলরের মৃত্যুতে।