বালুরঘাটে খোকন-খুনের অভিযোগের মামলায় নিহত মাছ ব্যবসায়ী পরিতোষ দের দাদা জয়দেববাবুকে মূল অভিযুক্ত বলে এফআইআর দায়েরের ঘটনায় ব্যবসায়ী মহলে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। নিহত খোকন কর্মকারের স্ত্রী শম্পাদেবী খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ৪ জনের নাম উল্লেখ করেন। তাতে আরও ১০-১২ জনের যুক্ত থাকার অভিযোগ দায়ের করেন। ওই চার জনের মধ্যে মাছ ব্যবসায়ী প্রবীণ জয়দেব দের নাম রয়েছে। এক বয়স্ক মাছের আড়তদার বাবু ঘোষ-সহ আর দুই মাছ ব্যবসায়ী মূল অভিযুক্ত বলে এফআইআরে উল্লেখ রয়েছে। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, ৬৫ বছর বয়স্ক জয়দেববাবুর তিন সপ্তাহ আগে ডান চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে। উচ্চ রক্ত চাপ ও ইউরিক অ্যাসিডের রোগী জয়দেববাবু ঠিক মত দেখতে পান না। স্বাভাবিক ভাবে হাঁটতেও পারেন না। তিনি কী করে খুনে সামিল হন সে প্রশ্ন তুলে তাঁর বাড়ির লোকেরাও ক্ষুব্ধ ও আতঙ্কিত।
খাদিমপুর এলাকায় বাড়িতে বসে জয়দেববাবুর স্ত্রী নীতাদেবী বলেন, “এফআইআরে ওঁর নাম রয়েছে শুনে আতঙ্কে রয়েছি। কারও ঘুম হচ্ছে না। ওঁর বয়স এখন ৬৫। ২১ দিন আগে অস্ত্রোপচার হয়েছে। হাঁটতে পারেন না ঠিকমত। তিনি খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত, তা ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছি না।” তিনি জানান, দেওর পরিতোষ দে খুনের পর থেকে দোষীদের সাজা চেয়ে তিনি প্রশাসন ও আদালতে ঘুরেছেন। তাই ওই খুনের ঘটনায় ওঁকে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বালুরঘাট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক হরেরাম সাহা বলেন, “এই রকম হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। ঘটনার সময় জয়দেববাবুরা ছিলেন না বলে শুনেছি। আমরা বালুরঘাট থানার আইসিকে বলেছি, ওই ঘটনার জেরে ব্যবসায়ীদের অহেতুক হয়রানি যেন না করা হয়।”
বুধবার সন্ধ্যায় বুড়া কালীবাড়ি বাজার এলাকায় ক্ষিপ্ত একদল জনতা তোলাবাজদের পান্ডা সন্দেহে খোকন কর্মকারকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে খুন করে। রাতেই নিহতের স্ত্রী বালুরঘাট থানায় মাছ ব্যবসায়ী জয়দেববাবু-সহ চার জনের নামে অভিযোগ করেন। এফআইআর-য়ের বিষয়টি জানাজানি হতেই ব্যবসায়ী মহলে চাঞ্চল্য ছড়ায়। তবে ঘটনার রাতেই পুলিশ খিদিরপুর হালদারপাড়া এলাকা থেকে খোকন খুনে অভিযুক্ত সন্দেহে মিঠুন হালদার নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে। জখম অবস্থায় বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি মাছ বিক্রেতা সুধীর হালদারকে গ্রেফতার করা হয়। দুজনের বিরুদ্ধে খুনের মামালা দায়ের করেছে পুলিশ।
পুলিশের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলে সরব সব পক্ষই। তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রবীর রায়ের বক্তব্য, “তোলাবাজি ও খুনের ঘটনা পুলিশ দেখেছে। পুলিশ প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।” আরএসপি নেত্রী সুচেতা বিশ্বাস বলেন, “জয়দেববাবুর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগের ব্যাপারে পুলিশকে নিরপেক্ষ হতে হবে।” জেলাপুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “শহরের পরিবেশ স্বাভাবিক। সবদিক খতিয়ে দেখে তদন্ত চলছে।”