চাষিরা জানেন না, থমকে ধান কেনা

যাঁদের থেকে ধান কেনা হবে, খবর দেওয়া হয়নি তাঁদেরই। তার ফলে ধান কেনা শুরু করেও, দিনের বেশিরভাগ সময়েই কৃষকদের অপেক্ষাতে কেটে যাচ্ছে খাদ্য দফতরের কর্মী আধিকারিকদের। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকে এমনটাই ঘটেছে বলে অভিযোগ। গত ১ ডিসেম্বর থেকে সদর ব্লকে ধান কিনতে শুরু করেছে খাদ্য সরবারহ দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৩৫
Share:

যাঁদের থেকে ধান কেনা হবে, খবর দেওয়া হয়নি তাঁদেরই। তার ফলে ধান কেনা শুরু করেও, দিনের বেশিরভাগ সময়েই কৃষকদের অপেক্ষাতে কেটে যাচ্ছে খাদ্য দফতরের কর্মী আধিকারিকদের। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকে এমনটাই ঘটেছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

গত ১ ডিসেম্বর থেকে সদর ব্লকে ধান কিনতে শুরু করেছে খাদ্য সরবারহ দফতর। প্রতিদিন সাড়ে ৩ হাজার কুইন্টাল কেজির বেশি ধান কেনা হবে না বলে স্থির করা হলেও, গত সোম এবং মঙ্গলবার মিলে দেড় হাজার কুইন্টাল ধান কিনতে পেরেছে খাদ্য দফতর।

অন্যবার ধান কেনার আগে পঞ্চায়েত সমিতিকে জানানো হয়। সেই মতো পঞ্চায়েত সমিতির তরফে গ্রামে মাইক নিয়ে প্রচারও করা হয়। এ বারে ধান কেনা শুরু হলেও জলপাইগুড়ি সদর পঞ্চায়েত সমিতি কর্তৃপক্ষকে সরকারি ভাবে জানানো হয়নি বলে অভিযোগ। কবে, কখন, কোথায় ধান কেনা হবে পঞ্চায়েত সমিতির তরফে সেই প্রচার না হওয়ায় গ্রামের কৃষকদের কাছে সেই খবর পৌঁছয়নি বলে জানা গিয়েছে। যদিও, খাদ্য দফতর সূত্রে দাবি করা হয়েছে, পঞ্চায়েত সমিতিকে নিয়ম মতোই চিঠি পাঠানো হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা খাদ্য দফতরের নিয়ামক রিঞ্চেন শেরপা বলেন, “জলপাইগুড়ি সদর-সহ সব পঞ্চায়েত সমিতিকেই চিঠি পাঠানো হয়েছে। কোনও কারণে চিঠি পৌঁছতে দেরি হতে পরে।” আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত ধান কেনা চলবে বলে তিনি জানিয়েছেন

Advertisement

জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের কৃষক অনুকুল রায় বলেন, “কবে থেকে ধান কেনা হয়েছে তা জানতেই পারিনি। তাই ধান নিয়ে যেতে পারিনি। আগের বার তো মাইকে প্রচার হয়েছিল।” বেরুবাড়ি এলাকার কৃষক মহম্মদ জামির বলেন, “ধান কেনা শেষ হয়ে যাওয়ার পরে জানতে পেরেছি। তাই ধান নিয়ে যেতে পারিনি।” সদর পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানানো হয়েছে, অন্যবার ধান কেনার ক্যাম্প প্রচারের জন্য খাদ্য দফতর তাদের আর্জি জানায়। সমিতির সভাপতি রাখি বর্মন বলেন, “খাদ্য দফতর থেকে এবার আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে পরিকল্পনা না জানার ফলে কোনও প্রচার করতে পারিনি। রাজ্য সরকারের ধান কেনার বিষয়ে কৃষকেরা না জানার ফলেই ধান বিক্রি করতে আসছেন না।”

খাদ্য দফতর অবশ্য জানিয়েছে, তাদের তরফ থেকেই ধান কেনা নিয়ে প্রচার চালানো হয়েছিল। এখনও সে ভাবে ধান না কাটায় বিক্রির জন্য কৃষকদের ভিড় হয়নি। দফতরের এক আধিকারিকের পাল্টা প্রশ্ন, কৃষকরা যদি ধান কেনার কথা নাই জানবেন, তবে দু’দিনে অল্প হলেও ধান কেনা সম্ভব হল কী ভাবে?

গত সোমবার এবং মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি সদর পঞ্চায়েত সমিতির খারিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত, দক্ষিন বেরুবাড়ির সাতকুরা এবং মানিকগঞ্জে ক্যাম্প করে ধান কেনা হয়। তিনটি জায়গা গত দু’দিনে যথাক্রমে ২৫০, ৭৫৬ এবং ৫১৫ কুইন্টাল ধান কেনা হয়। তিনটি জায়গায় যথাক্রমে ২৫, ৮১ এবং ৫২ জন কৃষক ধান বিক্রি করেছেন বলে জানা গিয়েছে। আগামী মাসে ফের একই জায়গায় ক্যাম্প হবে বলে খাদ্য দফতর জানিয়েছে। ময়নাগুড়ি এবং রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতি কর্তৃপক্ষও ধান কেনার কথা জানেন না বলে দাবি করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন