ছেলেকে কয়লাচোর অপবাদ দেওয়ার প্রতিবাদ করায় এক বিজেপি সমর্থককে হাঁসুয়া দিয়ে কোপানোর অভিযোগ উঠেছে তিন তৃণমূল সমর্থকের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহ জেলার কালিয়াচক থানার আকন্দবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্রীনিবাসপুর গ্রামে। আহতের নাম রাজকুমার মণ্ডল। তিনি নিজের জমিতেই চাষবাস করেন।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামেই কৃষ্ণ মঞ্জব নামে এক ব্যক্তির ইট ভাটা রয়েছে। সেই ইট ভাটা থেকে রাজকুমারের ছেলে শঙ্কর কয়লা চুরি করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। এই অভিযোগ তুলে এদিন রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ কৃষ্ণ দলবল নিয়ে শঙ্করকে গালিগালাজ ও মারধর করায় প্রতিবাদ করে রাজকুমার। সেই সময় রাজ কুমারকে হাঁসুয়া দিয়ে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ।
তাঁর মাথায় ও নাকে হাঁসুয়ার কোপ লাগে। পরে পড়শিরা ছুটে গেলে অভিযুক্তরা পালায়। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে সিলামপুর গ্রামীণ হাসপাতাল নিয়ে গেলে চিকিত্সকেরা মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন।
এই ঘটনায় কৃষ্ণ মন্ডল সহ নরেন মন্ডল এবং শঙ্কর মন্ডলের নামে কালিয়াচক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। রাজকুমার বাবু বলেন, “ছেলে কোন কয়লা চুরি করেনি। তাকে মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে তারা বাড়িতে মারতে আসে। আমি প্রতিবাদ করলে আমার উপরে চড়াও হয়। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপির সমর্থক। তাদের সঙ্গে আমাদের কোন বিবাদ ছিল না। কেন এমন করল তা বুঝতে পারছি না। রাজনৈতিক কারণে হামলা করা হয়েছে কিনা তা আমি বলতে পারব না।”
তাঁর দাদা সুকুমার বাবু ঘটনাটিকে রাজনৈতিক হিসেবে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন থেকে বিজেপির সমর্থক। কৃষ্ণরা তৃণমূল করে। পঞ্চায়েত ভোটের সময় তারা আমাদের তাদের দলে যোগ দিতে বলেন। আমরা রাজি হয়নি। তাই আমার ভাই এর উপরে এদিন পরিকল্পিত ভাবে হামলা করা হয়েছে। আমরা তিনজনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক।”
বিজেপির জেলা সভাপতি শিবেন্দু শেখর রায় বলেন, “শুনেছি, আমাদের দলের এক কর্মীকে তৃণমূলের কর্মীরা হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়েছে। ওই এলাকায় আমাদের সমর্থক বেশি থাকায় তারা সন্ত্রাস সৃষ্টি করে কর্মীদের মধ্যে ভয় ছড়াতে চাইছে।” যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি বলেন, “পারিবারিক একটি বিবাদ। এখানে রাজনৈতিক কোন বিষয় নেই। আমাদের দলের কেউ জড়িত নেই।” মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত চলছে।”