দেবব্রত মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
জাতীয় শিক্ষকের পুরস্কার পাচ্ছেন কোচবিহার জেনকিন্স হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দেবব্রত মুখোপাধ্যায়। বুধবার রাতে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন দফতর থেকে ওই খবর জানিয়ে দেবব্রতবাবুর কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জেনকিন্স স্কুলে বসে দেবব্রতবাবু অবশ্য সম্মান ভাগ করে নিলেন সবার সঙ্গে। বললেন, “এই সম্মান স্কুলের সকলের। সেপ্টেম্বরের পয়লা তারিখেই স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে দিল্লি রওনা হচ্ছি। ৫ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতির হাত থেকে ওই পুরস্কার নেওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনছি।” মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কোচবিহার জেলা প্রতিনিধি পার্থপ্রতিম রায়ও এই খবর জেনে দেবব্রতবাবুকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “এ বার জেলা থেকে এখনও পর্যন্ত দেবব্রতবাবুর নাম জাতীয় শিক্ষকের পুরস্কারের জন্য চূড়ান্ত হয়েছে বলে খবর এসেছে। আমরা দারুণ খুশি। ওঁকে অভিনন্দন জানিয়েছি।”
১৯৮৬ সালে পুরুলিয়া জেলা স্কুলে পদার্থবিদ্যার শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন দেবব্রতবাবু। হুগলির উত্তরপাড়ায় তাঁর আদি বাড়ি। পরবর্তী সময়ে কলকাতা মাদ্রাসা, উত্তরপাড়া গর্ভমেন্ট হাইস্কুল, বীরভূম জেলা স্কুলে তিনি শিক্ষকতা করেছেন। ২০১৪ সালে বদলি হয়ে কোচবিহার জেনকিন্স স্কুলে যোগ দেন। ওই বছরের নভেম্বর মাস থেকে তিনি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে রয়েছেন। স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক জানিয়েছেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শিক্ষার উন্নয়নে একাধিক পদক্ষেপ করেছেন দেবব্রতবাবু।
স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে আলোচনাসভা, অভিভাবক সভা, ভিডিও কনফারেন্সে বেলুড়ের বিদ্যালয়ের সঙ্গে ই-ক্লাস চালুর মত উদ্যোগে সাড়াও মিলেছে। এ ছাড়াও পড়ুয়াদের কোথায় ভুল হচ্ছে তা শোধরাতে অভিভাবকদের ডেকে স্কুলেই পরীক্ষার খাতা দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। গতবছর তিনি শিক্ষারত্ন পুরস্কারও পান। এ বার জাতীয় শিক্ষকের পুরস্কারের পাশাপাশি একটি বেসরকারি সংস্থার ‘গুরু সম্মান’ পুরস্কারের জন্যও তাঁর নাম চূড়ান্ত হয়েছে। সবমিলিয়ে সহকর্মীর এমন সাফল্যে শিক্ষক মহলে খুশির হাওয়া। ওই স্কুলের শিক্ষক প্রভাত রায় বলেন, “আমরা সকলেই দারুণ খুশি। ১৯৫৮ সালের জেনকিন্সের কর্মরত শিক্ষক হিসেবে প্রবোধ গোস্বামী প্রথম জাতীয় শিক্ষকের পুরস্কার পান। সেদিক থেকে দেখলে দেবব্রতবাবু স্কুলের দ্বিতীয় শিক্ষক, যিনি এই সম্মান পেলেন।”
কোচবিহার জেলা তো বটেই রাজ্যের শিক্ষা মানচিত্রেও জেনকিন্স স্কুলের সুনাম ও আলাদা পরিচিতি রয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় একাধিকবার স্কুলের পড়ুয়ারা মেধা তালিকায় জায়গা পেয়েছে। এক অভিভাবক বলেন, ‘‘দেবব্রতবাবুর জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্তি ওই সাফল্যে বাড়তি মাত্রা যোগ করল।’’