জমি নিয়ে বিবাদের জেরে হামলা, খুনের চেষ্টা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করার ১২ দিন পর অভিযোগকারিনী মহিলা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার থানার বোরোট এলাকার বাসিন্দা, ওই মহিলা নতুন করে ১০ জন প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে তাঁর জা ও দশ বছরের মেয়েকে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই বাড়িতে গিয়ে যে গৃহবধূকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, তাঁকে ও মেয়েটির খোঁজ পায়নি।
জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, “ঘটনার দিন গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের না করে ওই মহিলা কেনও ১২দিন পর অভিযোগ দায়ের করলেন তা বুঝতে পারছি না।” পুলিশ সুপার জানান, হামলা, খুনের চেষ্টা ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর ওই গৃহবধূ ও তাঁর মেয়ের ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছিল। সেইসময় ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি। ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। ওই দুইজন চাঁচলে আছেন বলে অভিযোগকারী বলেছেন। তবে কোথায় আছেন তা বলতে পারছেন না। নতুন অভিযোগ মূল মামলার সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে। ওই গৃহবধূ ও তার মেয়েকে পাওয়া গেলে তাঁদের ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই মামলায় অভিযুক্ত মোট ১০ জনের মধ্যে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে তারা জেল হেফাজতে রয়েছে। মূল অভিযুক্ত ভুলু দাস ঘটনার পর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে। অভিযোগকারী মহিলার দাবি, পড়াশোনা জানি না। ইটাহার থানায় পুলিশের একজনকে দিয়ে গত ১৯ অক্টোবর এফআইআর করি। সেইসময় ধর্ষণের কথা বললেও তা এফআইয়ারে তা উল্লেখ করা হয়নি। তাই নতুন করে অভিযোগ করেছি।
গত বুধবার ইটাহারের প্রাক্তন সিপিআই বিধায়ক শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায় অভিযোগকারী ওই মহিলার বাড়িতে গিয়ে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। শ্রীকুমারবাবুর কথায়, “অভিযুক্তদের অনেকেই তৃণমূল কর্মী সমর্থক বলে এলাকায় পরিচিত। সেইকারণেই পুলিশ কায়দা করে গণধর্ষণের বিষয়টি মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়।” পুলিশ সুপার এই অভিযোগ খতিয়ে দেখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য বলেছেন, “ইটাহারের হারানো মাটি পুনরুদ্ধার করতে শ্রীকুমারবাবুরা এখন ধর্ষণ নিয়ে মিথ্যাচারের রাজনীতি করছেন। দলের কেউ এসব কাজের সঙ্গে যুক্ত নয়।”
ওই মহিলার অভিযোগ অনুযায়ী, ১৮ শতক জমি দখল করার জন্য গত ১৮ অক্টোবর ভুলু দাসের নেতৃত্বে অভিযুক্তরা তাদের বাড়িতে চড়াও হয়ে। তাঁর শ্বশুর, শাশুড়ি, জা ও জায়ের মেয়েকে মারধর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করে। বোমাবাজি ও গুলি চালিয়ে শ্লীলতাহানি করা হয়। সেই সময় ওই দুই জনকে গণ ধর্ষণ করা হয়েছে।