বছর দেড়েক আগে জমি নিয়ে গোলমালের জেরে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে দুই মহিলাকে মারধর, শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানার হায়দরপাড়ায়। বেশ কয়েক মাস বিষয়টি চাপা থাকার পর ফের সেই জমি দখল করতে একটি চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে শনিবার অভিযোগ উঠেছে। জমি দখল করে নির্মাণ শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সচিত্র পাল সরণি এলাকার গৃহবধূ কৃষ্ণা কর। ওই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে এলাকার ব্যবসায়ী অরূপ মজুমদারের। দেড় বছর আগে ওই জমিকে কেন্দ্র করে গোলমালের সময়েও তাঁর নামে অভিযোগ দায়ের হয়। ওই জমির মালিকানা নিয়ে আদালতে মামলাও রয়েছে। ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তারও অভিযোগ উঠেছে। এতদিন পরেও জমিটি নিয়ে সমস্যা কেন মেটেনি তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন এলাকার বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত খোঁজ নেবেন বলে আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, “বিচারাধীন জমিটিতে যাতে কোনওভাবে নির্মাণ না হয়, সংশ্লিষ্ট থানাকে তা দেখতে বলব।”
এদিন কৃষ্ণাদেবী বলেন, “বৃহস্পতিবার বাড়িতে হামলা চালায় কয়েকজন দুষ্কৃতী। বাড়ি ছাড়ারও হুমকি দেওয়া হয়। মেয়েকে রাস্তায় বার হলে দেখে নেওয়া হবে বলেও হুমকি দেয় তাঁরা। পুলিশে অভিযোগ জানানোর পরেও তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।” শনিবার তাঁদের জমির একাংশ দখল করে নির্মাণও শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “এর আগে ওই মহিলাকে মারধর করার পর আমি তাঁকে দেখতে গিয়েছিলাম। জমি নিয়ে এখনও কেন সমস্যা মেটেনি তা দেখতে পুলিশের সঙ্গে কথা বলব।” দলের নাম জড়িয়ে গেল কেন, তাও খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি। এলাকায় একশ্রেণির জমি মাফিয়া বহুদিন ধরেই সক্রিয় বলে অভিযোগ করেছেন অভিযোগকারীদের আইনজীবী অত্রি শর্মা। তিনি বলেন,“এলাকার জমি মাফিয়ারাই এই জমিটি দখল করতে চাইছে। এর মধ্যে বহু টাকার লেনদেন হয়ে থাকতে পারে বলে আমার ধারণা।” ২০১৩ সালের ১১ জানুয়ারি রাতে ওই জমি নিয়ে গণ্ডগোলের পরে অরূপবাবু এবং গোপাল সরকারের বিরুদ্ধে ভক্তিনগর থানায় মারধর, শ্লীলতাহানি, ভাঙচুর ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মামলা রুজু হয়। আবার অভিযুক্তদের তরফেও থানায়় পাল্টা অভিযোগ করা হয়। শনিবার অরূপবাবুকে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, ঘটনার কথা কিছুই জানেন না বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, “আমি তিন-চারদিন শহরের বাইরে রয়েছি। আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ হয়েছে।”
অরূপবাবুর বিরুদ্ধে বাম আমলেও তোলা আদায়ের অভিযোগে ভক্তিনগর থানা গ্রেফতার করে তাকে সময়ে। প্রভাবশালী সিপিএম নেতার ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে পুলিশের দাবি। ইদানীং সেবক রোড এলাকার এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার সঙ্গে অরূপবাবুকে নানা অনুষ্ঠানে দেখা যায় বলে কৃষ্ণাদেবীরা অভিযোগ করেছেন। অরূপবাবুর দাবি, “আমি ব্যবসা করি। সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে থাকি না।”