জল সমস্যায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের পড়ুয়ারা

গত দুই সপ্তাহ ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হস্টেলগুলির জল পরিস্রুত করার যন্ত্র। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পড়ুয়ারা। মেডিক্যাল কলেজের সাতটি হস্টেলে অন্তত সাতশো ছাত্রছাত্রী রয়েছেন। তাঁদের অধিকাংশই জল কিনে খেতে বাধ্য হচ্ছেন। কারণ হাসপাতালের তরফে যে জল সরবরাহ করা হয় তা পানের অযোগ্য। জলাধার বছরের পর বছর পরিষ্কার না হওয়ায় সেই জল খেতে চান না হস্টেলের পড়ুয়ারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৪ ০১:৪৩
Share:

গত দুই সপ্তাহ ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হস্টেলগুলির জল পরিস্রুত করার যন্ত্র। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পড়ুয়ারা। মেডিক্যাল কলেজের সাতটি হস্টেলে অন্তত সাতশো ছাত্রছাত্রী রয়েছেন। তাঁদের অধিকাংশই জল কিনে খেতে বাধ্য হচ্ছেন। কারণ হাসপাতালের তরফে যে জল সরবরাহ করা হয় তা পানের অযোগ্য। জলাধার বছরের পর বছর পরিষ্কার না হওয়ায় সেই জল খেতে চান না হস্টেলের পড়ুয়ারা। সে জন্যই বছর দুয়েক আগে শিলিগুড়ির বিধায়ক এবং উত্তরবঙ্গ মন্ত্রীর উদ্যোগে হস্টেলগুলিতে জল পরিস্রুত করার যন্ত্র লাগানো হয়। সেগুলি অকেজো হয়ে পড়ায় হস্টেলের পড়ুয়ারা বিপাকে পড়েছেন। সমস্যা মেটাতে ব্যবস্থা নেওয়া দূরঅস্ত, হস্টেলের পরিস্থিতি নিয়ে দুই সপ্তাহ ধরে দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা কোনও খোঁজখবরই নেননি বলে পড়ুয়াদের একাংশ অভিযোগ করেছেন। হস্টেলে জলের সমস্যার খবর পৌঁছেছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের কানেও। তিনি অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। তারপরেই সোমবার অকেজো হয়ে পড়ে থাকা জল পরিস্রুত করার যন্ত্রগুলি মেরামত করতে লোক ডাকা হয়। তবে এ দিনও জল কিনে খেতে হয়েছে পড়ুয়াদের। তাঁদের অভিযোগ, অধ্যক্ষের দফতরে জল পরিস্রুত করার ভাল ব্যবস্থা রয়েছে। কলেজের চিকিৎসকরা তা ব্যবহার করেন। সেটি ঠিক রাখতে কর্তৃপক্ষ যতটা তৎপর পড়ুয়াদের সমস্যা নিয়ে তাঁরা ততটা আন্তরিক নন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “ছাত্ররা জল পাবেন না এটা হতে পারে না। আমি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”

Advertisement

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায় কলেজের ভর্তি সংক্রান্ত প্রয়োজনে কলকাতায় রয়েছেন। হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাস বলেন, “জল পরিস্রুত করার যে সমস্ত যন্ত্র রয়েছে সেগুলি মেরামত করা হচ্ছে। মঙ্গলবার সকালের মধ্যে সেগুলি ঠিক হয়ে যাবে বলে আশা করছি।” হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই জানান, মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের জন্য প্রতিদিন ৫০ লক্ষ লিটার জল প্রয়োজন। পুরসভার ফুলবাড়ি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন তিন লক্ষ ৭৫ হাজার লিটার জল সরবরাহ হয়। বাকি চাহিদা মেটাতে পূর্ত দফতর পাম্পের মাধ্যমে ভুগর্ভ থেকে জল তুলে জলাধারে পাঠায়। ফুলবাড়ির জলের গুণগত মান ভাল। কিন্তু ভুগর্ভ থেকে তোলা জলের মান ভাল নয়। অথচ দুটি জল একই জলাধারে তোলার জন্য সমস্যা হচ্ছে। ফুলবাড়ি থেকে যে জল সরবরাহ করা হয়,তার পরিমাণ কম হওয়ায় আলাদা জলাধারও তৈরি করা যাচ্ছে না। সে কারণেই জলাধার থেকে সরবরাহ করা জল পরিস্রুত না করে খাওয়া যায় না বলে দাবি ছাত্র, চিকিৎসক, ও স্বাস্থ্য কর্মীদের। হাসপাতালেও সে কারণে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে।

মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, ছাত্রদের জন্য চারটি হস্টেল রয়েছে। সিনিয়র বয়েজ হস্টেল, নিউ বয়েজ হস্টেল, জুনিয়র বয়েজ হস্টেল। অপরটি ইনটার্নদের জন্য। ছাত্রী হস্টেল রয়েছে তিনটি। কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায় মেমোরিয়াল হস্টেল, নিউ গার্লস হস্টেল এবং লেডিজ হস্টেল। জুনিয়র বয়েজ হস্টেলে ছাত্র সংখ্যা দু’শোর মতো। তিন তলা ওই হস্টেল ভবনে তিনটি জল পরিস্রুত করার যন্ত্র দেওয়া হয়েছিল। সবগুলিই অকেজো হয়ে পড়েছে। বাইরে থেকে ৩০ টাকা দিয়ে জলের জার কিনছেন ছাত্ররা। পানীয় জলের ওই জার বাইরে ২০ টাকায় বিক্রি হয়। অথচ পড়ুয়াদের সমস্যা বুঝে ব্যবসায়ীরাও দাম বাড়িয়ে তাদের সরবরাহ করছেন বলে অভিযোগ।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন