(বাঁ দিকে) পুরসভা ভবন চত্বরে রিকশাচালকদের বিক্ষোভ। (ডান দিকে) কংগ্রেসের নেতৃত্বে টোটো চালকদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
টোটো-রিকশা বিবাদে উত্তপ্ত হয়ে উঠল দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট।
টোটো (ব্যাটারি চালিত রিকশা) বন্ধের দাবিতে বুধবার দুপুরে বালুরঘাট শহরে সাইকেল রিকশা নিয়ে অন্তত ২০০ রিকশা চালক রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান। পাল্টা টোটো চালকদের বিক্ষোভও হয়। তেতে ওঠে বালুরঘাটের চকভবানীর অফিসপাড়া এলাকা। উভয়পক্ষই স্মারকলিপি দেয় পুরসভাকে। পুর চেয়ারপার্সন চয়নিকা লাহা বলেন, “টোটো চালু বা বন্ধের বিষয়ে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। টোটোর ব্যাপারে আদালতের যদি কোনও নির্দেশ থেকে থাকে তবে তা প্রশাসন দেখবে।” জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশে প্রধান রাস্তায় টোটো চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। পাড়া ও গলির রাস্তায় টোটো চলতে পারে কি না, তা রাজ্যের পরিবহণ দফতরের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।” যদিও দক্ষিণ দিনাজপুর টোটো অনার্স ওয়ালফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বালুরঘাট শহরেও টোটো চলাচলের অনুমতি দিয়ে পুরসভাকে লাইসেন্স দিতে হবে।
এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে সাইকেল রিকশা নিয়ে শ’দুয়েক চালক পুরভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। সে সময় থানা মোড়ের কাছে দুই টোটো চালককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে বালুরঘাট থানা প্রচুর পুলিশ পুরসভার সামনে মোতায়েন করে। রিকশা চালকদের অভিযোগ, বালুরঘাটে অন্তত ৬০০ রিকশাচালক রয়েছেন। টোটোর দাপটে তাঁদের রোজগার তলানিতে ঠেকেছে। সাহেবকাছারি এলাকার রিকশা চালক বীরেন রায়, সুমন বর্মন, সুদীপ হালদারেরা দাবি করেন, “টোটো বন্ধে পুরসভা ও প্রশাসনকে আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে হবে।” তবে তাঁরা টোটো চালকদের মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে পুরসভায় বিক্ষোভের পর পুলিশি হস্তক্ষেপে দুপুর ১টা নাগাদ উত্তেজনা কমে। এর পরে জেলা কংগ্রেসের নেতৃত্বে টোটো চালকেরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পরিবেশবান্ধব টোটো রিকশাকে চলাচলের অনুমতি দিতে হবে বলে তাঁরা দাবিও জানান। মহকুমাশাসকের মাধ্যমে জেলাশাসকের কাছে তিন দফা দাবিতে তাঁরা স্মারকলিপি পেশ করেন। পুর কর্তৃপক্ষকেও স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
বালুরঘাটে শতাধিক টোটো রিকশা চলছে। গত সপ্তাহেও টোটো চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল জেলা প্রশাসন। ১৫টি টোটো আটক করে থানায় রাখা হয়। টোটো চালকদের পক্ষে এ দিন আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায়। তিনি অভিযোগ করেন, “এ রাজ্যে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর-সহ বেশ কয়েকটি শহরে পুরসভার অনুমতিতে টোটো চলছে। কিন্তু আইনের অপব্যাখ্যা করে বালুরঘাটে টোটো বন্ধ করার সুপরিকল্পিত চক্রান্ত চলছে।” চালক ও মালিকদের নানাভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, “টোটো বন্ধ করা হলে কংগ্রেস জেলা জুড়ে আন্দোলন করবে।”