কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে এগারো কর্মীকে শো-কজ করায় সর্বশিক্ষা মিশনের কোচবিহারের জেলা প্রকল্প আধিকারিক তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারী সংগঠনের তোপের মুখে পড়েছেন। রবিবার তৃণমূল প্রভাবিত পশ্চিমবঙ্গ সর্বশিক্ষা মিশন এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের প্রথম জেলা সম্মেলন হয়। কোচবিহার শহরের গুঞ্জবাড়ি এলাকায় ঠাকুর পঞ্চানন হলঘরে আয়োজিত সম্মেলনে সংগঠনের নেতৃত্ব বিষয়টি নিয়ে সরব হন। শো-কজের নির্দেশ প্রত্যাহার না করলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।
কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “নিয়ম মেনে ওই কর্মীদের শোকজ করা হয়েছে। কেউ সেটা মানতে না চাইলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক আমিনুল আহসান বলেন, “কর্মসংস্কৃতি রক্ষার জন্য জেলাশাসকের নির্দেশে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব কর্মীর পাশে দাঁড়ানোয় শাসক দল-প্রশাসনের তরজা প্রকাশ্যে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত ৩ জুলাই তৃণমূল প্রভাবিত সংগঠনের বেশ কিছু সদস্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া দফতরের কনফারেন্স হলে বৈঠক করেন বলে অভিযোগ। তাঁরা হলঘরের আলো, পাখা ও মাইক্রোফোন ব্যবহার করে সভা করেন। ঘটনার কথা জানা মাত্র জেলা প্রকল্প আধিকারিক দুই আধিকারিককে নিয়ে সেখানে গিয়ে সভার ভিডিয়ো রেকর্ডিং করেন। এ নিয়ে কর্মীদের সঙ্গে তাঁর বাদানুবাদ হয়। গোটা ঘটনা জেলা প্রশাসনের নজরে আনেন তিনি। কর্মীদের তরফে দাবি করা হয়, টিফিনের সময় কয়েক জন সদস্য নিজেরা ওই ঘরে বসে কথাবার্তা বলছিলেন। তাঁরা তা জেলা প্রশাসনকেও জানান।
এর পরে গত ৩০ জুলাই মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক ১১ কর্মীকে শোকজ করেন। কেন তাঁরা অফিস সময়ে কনফারেন্স হলঘরে জমায়েত হয়েছিলেন, তা নিয়ে কারণ দর্শানোর চিঠি দেন। তিন দিনের মধ্যে ওই চিঠির উত্তর দিতে বলা হয়েছে। ব্যক্তিগত ভাবে অর্ধেকের বেশি কর্মী চিঠির উত্তর দিয়েছেন। সংগঠনের দাবি, বাকিরাও উত্তর দেবেন। সাংগঠনিক ভাবে তাঁরা শোকজ প্রক্রিয়া বাতিলের দাবিতে অনড়। সম্মেলনের উদ্বোধক তৃণমূলের জেলা সভাপতি পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “শ্রমিক কর্মীরা দফতরের ঘরে বসে নিজেদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। এটা দোষের কিছু নয়। আধিকারিকরাও তাই করেন।” পশ্চিমবঙ্গ সর্বশিক্ষা মিশন এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের জেলা আহ্বায়ক নির্মল দেবনাথ বলেন, “কয়েক জন ঘরোয়া আলোচনা করছিলেন। সাংগঠনিক ভাবে নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবিতে আমরা আন্দোলনে নামব।”