তৃণমূলের দুই কাউন্সিলরের বিরোধে অবরোধ, দুর্ভোগ

তৃণমূলের দুই কাউন্সিলরের মধ্যে বিবাদের জেরে বৃহস্পতিবার সকালে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ হয়ে রইল শিলিগুড়ির ইস্টার্ন বাইপাস। এক কাউন্সিলরের অনুগামীরা দলেরই আর এক কাউন্সিলরের কুশপুতুল পোড়ান। দীর্ঘ সময়ে রাস্তায় আটকে থেকে দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রী ও পর্যটকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৪ ০২:২৯
Share:

তৃণমূলের দুই কাউন্সিলরের মধ্যে বিবাদের জেরে বৃহস্পতিবার সকালে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ হয়ে রইল শিলিগুড়ির ইস্টার্ন বাইপাস। এক কাউন্সিলরের অনুগামীরা দলেরই আর এক কাউন্সিলরের কুশপুতুল পোড়ান। দীর্ঘ সময়ে রাস্তায় আটকে থেকে দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রী ও পর্যটকেরা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বেলা ১০টায় অবরোধ শুরু করেন শিলিগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন ডেপুটির মেয়র তথা তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মার অনুগামীরা। তাঁদের অভিযোগ, জবরদস্তি করে জমি দখলে বাধা দেওয়ায় তৃণমূলেরই কাউন্সিলর কৃষ্ণ পালের অনুগামী গোবিন্দ সরকার বুধবার রাতে রঞ্জনবাবুকে মারধর করেছেন। তা নিয়ে রাতেই শিলিগুড়ি থানায় এফআইআর করেন রঞ্জনবাবু। এদিন গোবিন্দবাবুএবং কৃষ্ণবাবুকে গ্রেফতারের দাবিতেই সড়ক অবরোধ করেন রঞ্জন-অনুগামীরা। কৃষ্ণবাবুর কুশপুতুলও পোড়ানো হয়।

কৃষ্ণবাবুর পাল্টা দাবি, “রঞ্জনবাবু জমি-পুকুরের সমস্যা ভাল বোঝেন।” সেই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, গোবিন্দবাবুর সঙ্গে রঞ্জনবাবুর জমি সংক্রান্ত কোনও বিবাদ হয়ে থাকতে পারে। তবে তাঁকে অহেতুক জড়ানো হচ্ছে। তিনি জানান, দলের নেতাদের সব জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “দল তদন্ত করে কে বা কারা জমি-সিন্ডিকেটে যুক্ত তা উদ্ঘাটন করে ব্যবস্থা নিক।” কৃষ্ণবাবুর অনুগামীরাও বাইপাশের কাছে দাঁড়িয়ে রঞ্জনবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। বছর পাঁচেক আগে শিলিগুড়ির শিক্ষা দফতরে ডেপুটেশন দিতে গিয়ে ডিআইয়ের মুখে থুতু ছিটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে প্রাথমিক শিক্ষক রঞ্জনবাবুর বিরুদ্ধে। সেই ব্যাপারে এখনও মামলা চলছে।

Advertisement

এ দিনের ঘটনার পরে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “বাইপাসের জমির কারবার নিয়ে কার সিন্ডিকেট কত শক্তিশালী তারই যেন প্রতিযোগিতা হল এ দিন।” বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ শিলিগুড়িতে এই অবরোধের খবর পান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় ও মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দল সূত্রের খবর, মুকুলবাবু সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশ দিলে রঞ্জনবাবুর অনুগামীরা অবরোধ তোলেন। মুকুলবাবু বিষয়টি নিয়ে দার্জিলিং জেলা কমিটির কাছে রিপোর্টও চেয়েছেন। তিনি বলেন, “তৃণমূলের দলনেত্রী অবরোধের রাজনীতির বিরোধী। তাই শোনা মাত্র ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” তবে জমি-সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে মুকুলবাবু মন্তব্য করতে চাননি। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। জমির কারবারে যুক্ত একজনকে গ্রেফতারের জন্য তল্লাশি শুরু হয়েছে।” তৃণমূল নেতারা একে অন্যের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিলেও কোনও স্পষ্ট লিখিত অভিযোগ অবশ্য তাঁরা করেননি বলে পুলিশ দাবি করেছে।

কলকাতার রাজারহাট নিউটাউন এলাকাতেও নির্মাণ কাজ থেকে শুরু করে ইমারতি দ্রব্যের সরবরাহ কার দখলে থাকবে এই নিয়ে তৃণমূলের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত ও বারাসত লোকসভার সাংসদ কাকলী ঘোষ দস্তিদারদের অনুগামীদের মধ্যে বিরোধ বারবার প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এ বার সেই বিরোধের দেখা মিলল শিলিগুড়িতেও। তবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “দুজনের সঙ্গেই আমার কথা হয়েছে। কেউ কাউকে মারার জন্য লোক পাঠায়নি।” তিনি জানান, যে ব্যক্তি মারধর করেছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলেছেন। এ ব্যাপারে দলের লোকজন জড়িত নয় বলে তিনি দাবি করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন