নির্বাচনের তরজায় সেতু-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ও

‘ত্রিফলা’ নিয়ে প্রচারে সব দল

ত্রিফলা নিয়ে প্রচারে মেতেছে ডান-বাম দুই পক্ষই। কেউ বলছেন, ত্রিফলা বদলে দিয়েছে কোচবিহারকে। কেউ বলছেন, সবটাই চমক। এই ত্রিফলা অবশ্য কলকাতা, শিলিগুড়ির বিতর্কিত ত্রিফলা আলো নয়, এই ত্রিফলা হল কোচবিহারে পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়, দিনহাটা-সিতাইয়ের মাঝে সিঙ্গিমারি নদীর উপরে সেতু এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। এক দিকে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা গ্রামে-শহরে ওই তিনটি কাজের খতিয়ান তুলে ধরে ভোটারের কাছে যাচ্ছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৪ ০১:২৯
Share:

ত্রিফলা নিয়ে প্রচারে মেতেছে ডান-বাম দুই পক্ষই। কেউ বলছেন, ত্রিফলা বদলে দিয়েছে কোচবিহারকে। কেউ বলছেন, সবটাই চমক। এই ত্রিফলা অবশ্য কলকাতা, শিলিগুড়ির বিতর্কিত ত্রিফলা আলো নয়, এই ত্রিফলা হল কোচবিহারে পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়, দিনহাটা-সিতাইয়ের মাঝে সিঙ্গিমারি নদীর উপরে সেতু এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। এক দিকে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা গ্রামে-শহরে ওই তিনটি কাজের খতিয়ান তুলে ধরে ভোটারের কাছে যাচ্ছেন। আর বামেরা সেতুর কাজের কৃতিত্ব দাবি করছেন। বাকি দুটি কাজকে চমক এবং ভাঁওতা বলে দাবি করছেন।

Advertisement

তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেছেন, “৩৪ বছর ক্ষমতায় থেকেও বামেরা যা যা করে উঠতে পারেননি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার তিন বছরে তা করে দেখাচ্ছেন। কোচবিহারে বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, সিঙ্গিমারি নদীর উপরে সেতুর কথা মানুষ কল্পনা করতে পারেননি। তা বাস্তবায়িত হয়েছে।” তিনি বলেন, “এর ফল আমরা ভোট-বাক্সে পাব। আর বামেদের কথা মানুষ এখন বিশ্বাস করেন না। কোচবিহারে একটি মেডিক্যাল কলেজের অনুমতি মিলেছে। রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমিও গঠন করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।”

যদিও বামেরা একমাত্র সেতু ছাড়া বাকি সব কিছুই ভাঁওতা বলেছেন। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “সিঙ্গিমারি নদীর ঊপরে সেতুর কাজ বাম আমলেই অনুমোদন পায়। ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। পূর্ত দফতরের মন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী সেতুর কাজের শিলান্যাস করেন। ওই সেতু আমরা করেছি। বাকি যে সব কাজের কথা বলা হচ্ছে সব চমক ও ভাঁওতা।” তাঁর কথাতে, “বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নেই, স্থায়ী পরিকাঠামোও নেই। যে ছাত্ররা সেখানে ভর্তি হয়েছেন তাঁদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে যাচ্ছে। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেরও একই অবস্থা। রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমি নাম কা ওয়াস্তে। তার কাজ মানুষ দেখেনি।”

Advertisement

তৃণমূলের বক্তব্য, ২০১৩ সালের ১৩ অগস্ট পুন্ডিবাড়িতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ভবনে কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় চালু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ২০০ জন। প্রথম সেমিস্টারে পরীক্ষা ও ফল বেরিয়েছে। অগস্টে ফের ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হবেন। শহরের কাছে কৃষি ফার্মে ১৭ একর জমিতে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষর দাবি, অগস্টের মধ্যে স্থায়ী জায়গায় কয়েকটি ক্লাস ঘর ব্যবহার উপযোগী হবে। কোচবিহারের হরিণচওড়া এলাকায় তোর্সা নদী ঘেঁষা জায়গায় শুরু হয়েছে সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পরিকাঠামো তৈরির কাজ। পাঁচিল তৈরির পাশাপাশি মূল বাড়ি কাজে হাত দেওয়া হয়েছে। তোর্সা নদীর বাঁধের কাজ শুরু হয়েছে। দিনহাটা থেকে সিতাই যাওয়ার পথে সিঙ্গিমারি নদীতে সেতুর দাবি দীর্ঘ দিনের। শাসকদলের দাবি, নতুন রাজ্য সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়। ইতিমধ্যে ১৩টি সেতু স্তম্ভ তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। বাকি স্তম্ভগুলি তৈরির কাজও চলছে। কংগ্রেসও পিছিয়ে নেই। কোচবিহার লোকসভা আসনের প্রার্থী কেশব রায় বলেন, “সেতু, বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সব থেকে বেশি আমরাই সরব। কিন্তু এখন ঢিমেতালে ওই কাজ চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন