দেড়শো টাকার জন্য পড়শিকে খুন

দেড়শো টাকা নিয়ে বচসার জেরে এক যুবককে খুনের অভিযোগ উঠেছে তাঁর পড়শির বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মেটেলি থানার ধূপঝোরার মনসার পাড়া এলাকায় টাকা নিয়ে বচসার জেরে এক যুবককে বেধড়ক পেটানো হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালবাজার শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৪৪
Share:

এই গাড়িটির ভাড়া নিয়েই বচসার সূত্রপাত।

দেড়শো টাকা নিয়ে বচসার জেরে এক যুবককে খুনের অভিযোগ উঠেছে তাঁর পড়শির বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মেটেলি থানার ধূপঝোরার মনসার পাড়া এলাকায় টাকা নিয়ে বচসার জেরে এক যুবককে বেধড়ক পেটানো হয় বলে অভিযোগ। গত শনিবার রাতে মঙ্গল সিংহরায় (৩৫) নামে ওই যুবকের মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মূল অভিযুক্ত ওয়াহেদ মহম্মদকে ধরেছে মেটেলি থানার পুলিশ। গত শনিবার যুবকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পরেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

Advertisement

মাটিয়ালি বাতাবাড়ি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধূপঝোরার গ্রামের বাসিন্দা মঙ্গল সিংহরায় একটি পণ্যবাহী ছোটগাড়ি ভাড়া দেন। তিনি নিজেই গাড়িটি চালাতেন। অন্য দিকে পড়শি ওয়াহেদ মহম্মদ ওরফে সোনা মহম্মদ পেশায় কৃষিজীবী। সম্প্রতি কৃষি পণ্য এবং সার আনার জন্য মঙ্গলের গাড়ি ভাড়া করেছিলেন ওয়াহেদ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে ভাড়া বাবদ দেড়শো টাকা বকেয়া ছিল মঙ্গলের। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ওয়াহেদের বাড়ি গিয়ে মঙ্গল বকেয়া ১৫০ টাকা দাবি করেন বলে বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন। সূত্রের খবর, সে দিন বকেয়া টাকা দিতে পারবে না বলে ওয়াহেদ জানালে, খেতের বেগুন তুলে দেওয়ার জন্য মঙ্গল দাবি জানায়। এরপরেই দু’জনের বচসা শুরু হয় বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, ওয়াহেদ ঘর থেকে লোহার রড এনে মঙ্গলের কোমরে এবং তলপেটে ক্রমাগত মারতে থাকে। ওয়াহেদের ভাই শরিফ মহম্মদও মঙ্গলকে মারধর করে বলে অভিযোগ।

মালবাজারের এসডিপিও নিমা ভুটিয়া বলেন, “মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। অন্য অভিযুক্তের খোঁজেও তল্লাশি চলছে।”

Advertisement

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সে রাতে জখম অবস্থায় বাড়ি ফিরে যায় মঙ্গল। হাসপাতালেও ভর্তি হতে চাননি। যদিও, গভীর রাতে ব্যথায় কাতর হয়ে পড়লে তাঁকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শনিবার দুপুরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। রাতে বাড়িতে দেহ পৌঁছয়। দেহ বাড়িতে রেখেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার এবং ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা। বাসিন্দাদের একাংশও বিক্ষোভে সামিল হন। ঘটনার পরই অভিযুক্ত ওয়াহেদ মহম্মদ এবং তার ভাই শরিফ মহম্মদ সপরিবারে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ। কিন্তু রাতেই পুলিশ ক্রান্তি এলাকা থেকে ওয়াহেদকে গ্রেফতার করে। এরপরেই বিক্ষোভ তুলে নেন বাসিন্দারা। এ দিন সকালে দেহ সত্‌কার করা হয়।

মঙ্গলের স্ত্রী মালতী দেবী বলেন, “মাত্র দেড়শো টাকার জন্য এ ভাবে কেউ মারতে পারে, তা ভাবতেই শিউরে উঠছি। ওঁদের অন্য কোনও মতলব থাকতে পারে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করুক।” এলাকার তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা মাম্পি রায়ের কথায়, “প্রশাসনের মঙ্গল সিংহের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো প্রয়োজন।”

এলাকার বাসিন্দা কিরণ রায় বলেন, “মঙ্গল ওর পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ব্যক্তি ছিল। গাড়ির ভাড়ার টাকা আদায় করতে গিয়ে ও মারধরের মুখে পড়ে। পরিবারটির প্রতি তাই পুরো গ্রামের সহানুভূতি রয়েছে।”

ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন