দফতর দখল, ভাঙচুরে অভিযুক্ত তৃণমূল

পে-লোডার দিয়ে সিপিএমের একটি দলীয় অফিস গুঁড়িয়ে দিয়ে দলের পতাকা টাঙানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের বিধানসভা কেন্দ্রের ফুলবাড়ি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। একই রাতে জলপাইগুড়ির তালমা এলাকায় সিপিএমের একটি অফিস ভেঙে লণ্ডভণ্ড করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দুটি ক্ষেত্রেই অবশ্য অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির তৃণমূল বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “আমরা এ সব রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। তৃণমূলকে বদনাম করতে অন্য কেউ পতাকা লাগিয়ে দিতে পারে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৪ ০২:২১
Share:

পে-লোডার দিয়ে সিপিএমের একটি দলীয় অফিস গুঁড়িয়ে দিয়ে দলের পতাকা টাঙানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের বিধানসভা কেন্দ্রের ফুলবাড়ি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। একই রাতে জলপাইগুড়ির তালমা এলাকায় সিপিএমের একটি অফিস ভেঙে লণ্ডভণ্ড করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দুটি ক্ষেত্রেই অবশ্য অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির তৃণমূল বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “আমরা এ সব রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। তৃণমূলকে বদনাম করতে অন্য কেউ পতাকা লাগিয়ে দিতে পারে।”

Advertisement

ভাঙচুরের পর। সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন।

সিপিএমের তরফে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য ও দার্জিলিং জেলার কার্যকরী সম্পাদক জীবেশ সরকার অবশ্য সিপিএমকেই দূষেছেন। জীবেশবাবু বলেন, “মাঝরাতে পে লোডার দিয়ে অফিস ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের মদতেই তা হয়েছে। পুলিশকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা সময় নিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। তার মধ্যে দুষ্কৃতীরা গ্রেফতার না হলে এনজেপি ফাঁড়ির সামনে অনশনে বসা হবে।” সেই সঙ্গে জীবেশবাবুর দাবি, “যদি সত্যিই তৃণমূল জড়িত না থাকে, তা হলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী ফুলবাড়িতে গিয়ে প্রকাশ্যে সে কথা ঘোষণা করে পতাকা তুলে দেওয়ার কথা বলুন।”

Advertisement

সমতলে অভিযুক্ত হলেও দার্জিলিং পাহাড়ে অবশ্য অভিযোগকারীর ভূমিকায় রয়েছে তৃণমূল। সেখানে তৃণমূল সমর্থকদের উপরে লাগাতার হামলা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তির গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দিকে। ইতিমধ্যেই মোর্চার হামলায় বেশ কয়েকজন তৃণমূল সমর্থক জখম হয়েছেন বলে পাহাড়ের তৃণমূল নেতারা জানিয়েছেন। এদিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে পাহাড়ের জখম এক তৃণমূল সমর্থককে দেখেন। এ দিন সকালে ফুলবাড়ির ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য, জীবেশবাবু-সহ দলের নেতারা। পুলিশের উপস্থিতিতেই ফের এলাকায় নিজেদের পতাকা লাগিয়ে দেন সিপিএম নেতৃত্ব। এনজেপি ফাঁড়িতে দলের তরফে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য দেবাশিস প্রামাণিক-সহ মোট ১৩ জন ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। অশোকবাবুরা কমিশনার জগমোহনের সঙ্গে দেখা করে অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। পুলিশ কমিশনার বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে তদন্ত হচ্ছে।”

জলপাইগুড়ি জেলা সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, এ দিন দুপুরে তৃণমূলের একদল সমর্থক তালমার রাজগঞ্জ জোনাল কমিটির দফতরে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে দলীয় পতাকা নামিয়ে দেয়। তার পরে তৃণমূলের পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়। জেলা সিপিএম সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এর আগে একইভাবে কায়দায় চমকডাঙ্গি, ঠুঠাপাড়া, গড়ালবাড়ি, নয়াবস্তি, বাড়ইপাড়া, বাকালি, ভোটপাড়া এলাকায় দলীয় দফতর দখল হয়েছে। পুলিশ কিছু জায়গায় ব্যবস্থা নিলেও সব জায়গায় নিচ্ছে না।” পার্টি অফিস দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়। তাঁর দাবি, “২০ বছর আগে সিপিএমের লোকজন এক ব্যক্তির জমি দখল করে পার্টি অফিস তৈরি করেন। ওই ব্যক্তি বৃহস্পতিবার জমি দখল নিয়েছেন বলে শুনেছি।” সিপিএম অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের নেতাদের দাবি, শুধু দফতর দখল না, পেশায় ব্যবসায়ী দলীয় সমর্থকদের বাজারে দোকান খুলতে দেওয়া হচ্ছে না। জেলা সিপিএম সম্পাদক তথা বামফ্রন্ট আহ্বায়ক কৃষ্ণবাবু বলেন, “সমস্ত ঘটনার কথা জানিয়ে রাজ্যপালকে স্মারকলিপি পাঠানো হবে।” জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও অভিযোগ পাওয়া মাত্র ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জেমস কুজুর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement